আপনার ব্যবহারিক জীবনের একটা দিনও কি খুঁজে পাবেন যেদিন প্লাস্টিকে হাত ঠেকালেন না? উত্তর অবশ্যই না আসবে। কারণ প্লাস্টিকের সহজলভ্যতার বশে বশীভূত আজ আমরা সবাই। খাবার থেকে ওষুধ কিংবা প্রসাধনী থেকে প্রযুক্তির পণ্য প্লাস্টিকের থাবা সর্বত্র। বারংবার গবেষকদের সতর্কবানী এলেও মানুষ হাল ছাড়ছে না। তাই দিনের পর দিন যে হারে প্লাস্টিক দূষণের মাত্রা বাড়ছে কয়েক শতক পর মানুষের বাসভূমি সংকটে। কপালে ভাঁজ পড়েছে তাই বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশের। যে যার মতো করেই চলছে প্রচেষ্টা। আর তার মধ্যেই ছক্কাটা মারল জাপান।
জাপানের ছোট্ট শহর কামিকাতসু। জঙ্গলে ঘেরা পার্বত্যাঞ্চল। বাসিন্দাও ওই দেড় কি দুইহাজারের কাছাকাছি। ২০০৩ সালেই জাপান তাদের ‘জিরো ওয়েস্ট’ এর লক্ষ্য স্থির করে। আর এই কর্মসূচিকেই সাফল্যের দোরগড়ায় আনে কামিতাসু শহরটি। গোটা শহর জুড়ে এখানে সমস্ত ডাস্টবিন তুলে নেওয়া হয়েছে। ময়লার গাড়িটাও আসে না বাড়ি বাড়ি। এখানে থাকতে গেলে প্রত্যেককে ‘ওয়েস্ট রিসাইক্লিং সেন্টারে’ গিয়ে নিজের হাতে বর্জ্য ফেলতে হবে। এমনকি আবর্জনাগুলিকে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা হচ্ছে কিনা তার তদারকিও হয় রোজ। কেউ গোলমাল করলেই কড়া চোখে সতর্ক করা হয়।
জাপানে বিপুল পরিমানে প্লাস্টিক ব্যবহার হয়। প্রত্যেকটি পণ্যের জন্য আলাদা আলাদা প্লাস্টিক। কিন্তু সেই প্লাস্টিক ব্যবহারের পর কখনো ফেলা যায়না। জড়ো করে রিসাইক্লিং করা হয়। কামিতাসু এই নিয়মটাকেই দৃঢ় করতে একটি বিশেষ ব্যবস্থাও নেয়। সেটি হল উপহার। আবর্জনা সঠিকভাবে ফেলতে পারলেই নিজের পছন্দ মতো জিনিস বাড়ি আনতে পারবে এলাকার বাসিন্দারা। এই ব্যবস্থাপনায় বেশ খুশিও হয়েছেন বাসিন্দারা। নিত্য নতুন প্রযুক্তিতে ভর করেই এগিয়েছে জাপানের এই ছোট্ট শহরটি। রিসাইক্লিংয়ের সাহচর্য্যে আজ কামিকাতসু প্লাস্টিক আবর্জনামুক্ত এক সুন্দর শহর। বিশ্বের দরবারে এক দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ।
Discussion about this post