‘উমা’কে বিসর্জন দিয়ে এবার বাঙালির মন মেতেছে মা কালীর পুজোর আরাধনায়। সপ্তাহের শেষেই কালী পুজো। ইতিমধ্যেই কুমোরটুলি জমজমাট মানুষের ভিড়ে। কেউ মায়ের প্রতিমা গড়া দেখছে মন ভরে। আবার কেউ ছবি তুলছে।
পটুয়াপাড়ার এই মৃৎ শিল্পীদের জীবন একটু অন্যরকম। সারাদিনের কাজে ব্যস্ত তারা। সময়ের সাথে সাথে নিজেদের অভ্যস্ত করে ফেলেছেন শিল্পীরা। তাইতো, মা লক্ষ্মীকে উমার কোলে ফিরিয়ে ‘উমা’ কেই অন্যরূপে সাজিয়ে তুলছেন শিল্পীরা। মনের মতো করে গড়ে তোলে মা কালীর প্রতিমা। তারপর প্রতিমার ‘সাজের সরঞ্জাম’ তৈরি করেন তারা।
কালী পুজোর দিনগুলোতে শুধু ঘরে ঘরে নয়, ছোট বড় সকলের মনে যেন জ্বলে ওঠে আলোর রোশনাই। ফুলঝুরি, রঙমশাল, তুবড়ি ছাড়া যেমন কালী পুজো জমে না! ঠিক তেমনই মা কালীর প্রতিমাতে তার দোসর ‘সাজ’ কে উপেক্ষা করা যায়না। ‘কালীর সাজ’ ছাড়া অসম্পূর্ণ মায়ের প্রতিমা। তিলোওমার পটুয়া পাড়ায় উঁকি দিলে দেখা যাবে অনেক কালীর সাজের দোকান। কিছু দোকান বহু পুরনো। আবার কিছু নতুন। কথায় বলে ‘শাড়িতেই নারী’। মা কালীও তো এক নারী। সেই কথা মাথায় রেখে মা কালীর জন্য বেশ রংবেরঙের শাড়ি তৈরি করছেন সেখানকার শিল্পীরা। তবে শুধু শাড়ি নয়। মায়ের মাথার মুকুট, গায়ের গয়না তৈরি হচ্ছে পটুয়াপাড়ায়। মুকুটে পুতি বসানোর কাজ চলছে এখন। মা কালীর ‘গয়নার বাক্সতে’ রয়েছে কানের দুল, গলার হার, নাকের নথ,টিকলি প্রভৃতি। রয়েছে আধুনিক ডিজাইনের চালি আর চাঁদমালা। আর মা কালীর ঐ রণচণ্ডী রূপের শোভা বাড়ায় মায়ের হাতের ‘খাড়া’। এই খাঁড়াও বিক্রি হচ্ছে দোকানে দোকানে। ছোট বড় সবধরনের আছে। খাঁড়ার দাম শুরু ৩০ টাকা থেকে।
ব্যস্ততার মাঝেই একজন শিল্পী গয়নার দাম ধরে ধরে বললেন। জানালেন মায়ের গয়নার দাম রেখেছেন দেড়শো টাকা থেকে। দাম বাড়বে গয়নার আকার ও ডিজাইনের ওপর। কাপড়ের ওপর কথায় কথায় জানা গেল সেই দোকানটির মালিক তিনিই। ‘মায়ের সাজ’ বানানোর কাজে তারও অবদান আছে। তবে তিনি একা নন। কাজে হাত মেলান আরও শিল্পীরা। আসলে মায়ের আশীর্বাদের জোড় আর তাদের শিল্পসত্ত্বা তৈরি হচ্ছে কালীর প্রতিমা আর তার দোসর ‘সাজ’।
Discussion about this post