শীতের দরজায় ইতিমধ্যেই কড়া দিতে শুরু করেছে নলেন গুড়। সাথেই শুরু হয়েগেছে শীত মরশুমের ভোজের মহোৎসব। এই মরশুমে নতুন গুড়, নানা বিধ মিষ্টি, শাক সবজির সাথে আরেকটি জিনিসের কথা না বললেই নয়! তা হলো সকলের প্রিয় কেক। শীত মানেই খ্রিস্টমাস, আর খ্রিস্টমাস মানেই কেক। আর এই যান্ত্রিক কেক মেশিনের যুগেও নিজের হাতে তৈরি ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখা এক চ্যালেঞ্জ। এই গুরু দায়িত্বই পালন করে আসছে ১১০ বছরের পুরনো কে আলী বেকারী শপ। কলকাতার বেশ পুরনো জার্মান বেকারীর দোকান হলো কে আলী বেকারী। ইতিমধ্যেই এ বছর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ উইকের জন্য অভিনন্দিত হয়েছে কলকাতার এই বেকারী। ‘পুরনো কলকাতার গল্প’ সোসাইটি এই বেকারিকে সম্মানিত করেছে। আরও একটি গর্বের মুহূর্তের সাক্ষী রইল কলকাতাবাসীরা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ১৯৪২ সালের ডিসেম্বর মাসে জাপানের বোমারু বিমান শহরে বোমা ফেলে। এই সময় শহরবাসীদের কিছু ঘন্টার কার্ফুর আওতায় আনা হয়েছিল। এই কিছু সময়ের মধ্যে যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যাতে সকলে ঘরে মজুত করতে পারে। ঠিক এই সময়েই কে আলী বেকারী জার্মান পাউরুটি বানিয়ে বিক্রি করতে শুরু করে। শহরবাসী যাতে সহজেই কিছু খাওয়ার পেতে পারে সেই কারণেই খোলা হয়েছিল এই দোকান। আর এখান থেকেই হাতে তৈরি জার্মান বেকারির পথ চলা শুরু হয়। এই ইতিহাস জানা গিয়েছে এখন দোকানের অন্যতম মালিক মহম্মদ মুজিবর রহমানের কাছ থেকে।
কে আলী বেকারীর আরেকটি জনপ্রিয় পাউরুটি হলো বাকারখানি। বর্তমানে কেক তৈরির ব্যবসা একটি বড় মাত্রা নিয়েছে। শহরের অলিতে গলিতে ছড়িয়ে আছে বহু কেকের দোকান এবং নতুন বেকারী। যন্ত্রের যুগেও নিজের অস্তিত্বকে বহাল ভাবে টিকিয়ে রেখেছে কে আলী বেকারি। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, “ওল্ড ইস গোল্ড” অর্থাৎ পুরনো জিনিস সর্বদাই সোনা। আর কে আলী বেকারী হলো শহরের বুকে অন্যতম সোনা থুড়ি বেকারির দোকান। যান্ত্রিকতার যুগে হাতে করে যত্নে তৈরি যে কোনও জিনিসে থাকে ভালোবাসার স্বাদ। সেই ভালোবাসার স্বাদের দেখতে দেখতে এক শতাব্দীরও বেশি পথ চলে এসেছে এই বেকারি।
Discussion about this post