মেদিনীপুরের পটুয়া গ্রামের কথা সকলেই কম বেশি জানেন হয়তো। এ গ্রামের বাসিন্দারা শুধু পট লিখে বা পটের গান গেয়েই থেমে নেই। এ গ্রামে তৈরি হয় এক বিশেষ পুতুল। এ পুতুল ছাঁচে তৈরি হয় না। বরং এ পুতুল তৈরি হয় বেলে মাটি দিয়ে। হাতের তালুতে বেলে মাটি নিয়ে আঙুল দিয়ে অন্যরকম কায়দায় তৈরি হয় এই ‘যো’ পুতুল।
বর্তমানে এ পুতুলের একজন বিশেষ চিত্রকর রেজিনা। সে এই পুতুল বানানো শিখেছে তার মা আয়েশা চিত্রকরের কাছ থেকে। পুতুলের হরেক রকম মূর্তি হয়। কোনোটা মায়ের কোলে শিশু, মা সন্তানকে তেল মাখাচ্ছে, মায়ের কোলে শিশু বসে আছে ইত্যাদি। শুধু এই নয় সাথে থাকে ঘোড়া, পাখি, কুকুর নানা কিছুর মূর্তি। পুতুল তৈরির পর তা আগুনে পুড়িয়ে নেওয়া হয়। এতে তার গড়ন আরও পোক্ত হয়।
‘যো’ পুতুলের আরও বেশ কিছু নাম রয়েছে। তার মধ্যে একটা নাম হলো ষষ্ঠী পুতুল। গৃহস্তের খোকা হোক বা নতুন বউয়ের কোলে ছেলে থাক এমন ইচ্ছে থেকেই তৈরি করা হয় এই পুতুল। আবার অনেক সময় রঙ দিয়েও সাজানো হয় পুতুলগুলোকে। পণ্ডিতরা বলেছেন, এ পুতুল আসলে ‘ভেনাস ফিগারাইন’। মিশর, মেসোপটেমিয়া, সিন্ধু সভ্যতায় পাওয়া পুতুলের রূপের সাথে অদ্ভুত মিল আছে এই ‘যো’ পুতুলের।
এ পুতুলের আরও নাম রয়েছে। ‘এজলেস ডল’ এবং ‘চিরন্তনী পুতুল’ নামেও এ পুতুল খ্যাত। মূলত মেয়েরাই পুতুল তৈরির ধারা বয়ে নিয়ে চলেছে। এ পুতুলকে ছেড়ে এবার নতুন ভাবনায় পা বাড়িয়েছেন শিল্পীরা। এক নতুন মূর্তি তৈরি করেছেন তারা, ঘোড়ায় চড়া টুপি মাথায় এক পুরুষ। নেতাজির মূর্তি বলেই এ মূর্তির পরিচয়। পুতুলের আকার ছোটো সাথে ওজন হালকা হওয়ায় ঝুড়ি করে মেলায় নিয়ে যাওয়া যায়।
Discussion about this post