হাওড়ার ডোমজুড়ের প্রায় প্রতি ঘরেই চলে সোনার গয়না বানানোর কাজ। এখানে প্রায় পাঁচ হাজার শিল্পী-কারিগর এই কাজে যুক্ত। ডোমজুড়ের এই শিল্পের পিছনে রয়েছে প্রায় কয়েকশো বছরের পুরনো ইতিহাস। প্রায় একশো বছর আগে এই ডোমজুড় গ্রামের কিছু মানুষ কাজের খোঁজে মুম্বই ও হায়দ্রাবাদে যান। সেখানে গিয়ে তারা জুয়েলারি ইন্ড্রাস্টিতে কাজ শুরু করে। সেখানে থেকেই তারা এই শিল্প সংক্রান্ত নানা অভিজ্ঞতা অর্জন করে। ডোমজুড়ে ফিরে এসে সেইসব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে শুরু করে সোনার গয়না তৈরির কারবার। তারপর ধীরে ধীরে সোনার অলঙ্কার শিল্পে হাওড়ার এই অঞ্চলের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এই অঞ্চলের মানুষদের বিশেষ একটি রোজগারের পথ হয়ে ওঠে এই কারবার।
কলকাতার বড় বড় গয়নার দোকান থেকে বরাত পায় এখানকার শিল্পীরা। তা থেকে পাওয়া মজুরিই কারিগরদের রোজগার। বড়ো কারিগররা কলকাতা থেকে বরাত আনে। তার কারখানায় সে নিজে ছাড়াও আরও কিছু ছোটো কারিগর কাজ করে। চুক্তির ভিত্তিতে কাজের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। তাই সোনার দাম বাড়ার সময়গুলোতে কলকাতার দোকানগুলো যখন বড় অর্ডার পায় না তখন এই সমস্ত গহনা শিল্পীদের চূড়ান্তভাবে ভুগতে হয়। লকডাউন ও নোটবন্দির সময়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে গেছেন এই গয়না শিল্পীরা। শহর কলকাতার ঝাঁ চকচকে গয়নার দোকানের পিছনের আসল নির্মাতা হল হাওড়ার ডোমজুড়।
শুধু গয়নার কারিগররাই নয়, এই শিল্পে জড়িয়ে আছে আরও অনেকে যারা এই শিল্পের নানান সামগ্রী জোগান দেয়। ডোমজুড়েয় গয়না শিল্পীদের সংগঠন ‘ডোমজুড় স্বর্ণ রোপ্য শিল্পী সমিতি’ বিশ্বাস করে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডোমজুড়ের অর্থনীতিকে অন্য মাত্রা দেবে এই শিল্প।
Discussion about this post