৬ ডিসেম্বর, দিনটির সাথে জড়িয়ে আছে এক দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। বিশ্ব মানচিত্রেও দিনটির গুরুত্ব যথেষ্ট। এই সেই ঐতিহাসিক দিন যেদিন ভারত বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর নয় মাসের দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ‘গভীর বন্ধুত্বের প্রতিফলন হিসেবে আজ বাংলাদেশের সঙ্গে মৈত্রী দিবস পালন করবে ভারত। দিনটিতে প্রতি বছর, ভারত সরকার এবং বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অমূল্য অবদানকে স্মরণ করে। এই বছর মৈত্রী দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে ৩০ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মৈত্রী সপ্তাহ উদযাপিত হয়েছে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানিয়েছেন,-“মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় দিনটিকে মৈত্রী দিবস বা বন্ধুত্ব দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।” বাংলাদেশ এবং ভারত ছাড়াও ভারত বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী আরও ১৮টি দেশ আজ মৈত্রী দিবস পালন করবে। দেশগুলো হলো বেলজিয়াম, কানাডা, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে বন্ধুত্ব দিবসের আজকের এই কর্মসূচি বিশ্বে কয়েকটি শহরে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে পরবর্তী তারিখে অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের মিশন প্রধানদের ভাষণ, স্বাগতিক দেশের প্রধান অতিথির ভাষণ। এছাড়াও রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং পরবর্তীতে উভয় দেশের খাবারের প্রদর্শনী সংবর্ধনা। যৌথ উদযাপনের অংশ হিসেবে কিছু মিশন দ্বারা দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ককে চিত্রিত করে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং সেমিনার আয়োজন করা হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যুদ্ধের প্রবীণ সৈনিকদের সফর বিনিময়, নৌ-যান পরিদর্শন বিনিময়, ক্রীড়া অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও ভারত অন্যান্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের জন্য বছরব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন শহরে বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনী প্রদর্শিত হচ্ছে। ২০২১ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করেন। এ সময় দুই নেতা বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের ৫০ বছর স্মরণে ডাকটিকিটও উন্মোচন করেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই যৌথ উদযাপন হল জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। যা উভয় দেশের নেতৃত্বের আগামী পঞ্চাশ বছর এবং তারপরেও যৌথ সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে। এই উদযাপন দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর ও মধুর করে তুলবে।
Discussion about this post