যে কোনও ভাজাভুজি হোক অথবা চাইনিজ। এইসব খাবারের স্বাদ দ্বিগুণ বেড়ে যায় যখন তা টমেটো সস দিয়ে খাওয়া হয়। কিন্তু ভাবতে পারছেন ঊনবিংশ শতকে এই সসই কিন্তু ব্যবহার হতো ওষুধ হিসাবে। অবাক লাগলেও এটাই সত্যি।
পূর্বে সস তৈরি হত মাছ এবং মাশরুমের সংমিশ্রণে। পশ্চিমের প্রসিদ্ধ এক ডাক্তার জন কুক বেনেট ১৮৩৪ সালে প্রথম টমেটো দিয়ে সস তৈরি করেন। শুধু তাই নয়। তার তৈরি সসকে তিনি ওষুধ হিসাবে দাবিও করেন। এতে সন্দেহ নেই যে টমেটোর মধ্যে প্রচুর পরিমান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি থাকে। তাই বলে ওষুধ! ডাক্তার বেনেটের মতে এই টমেটো সস ডাইরিয়া, বদহজম, বাতের রোগ এমনকি জন্ডিসের জন্যেও উপযোগী। এরপরে সেই সসের একপ্রকার বড়ি বানানো হয় যা ‘টমেটো পিল’ নামে বাজারে ছাড়া হয়।
মানুষ টানা বহু বছর ওষুধ হিসাবেই টমেটো সস এবং পিল দুইই খেতে থাকেন। এরপরে বাজারে কপিক্যাটরা তাদের বানানো টমেটোর বড়ি নিয়ে আসেন। শুধু তাই নয়, বেনেটের টমেটো পিলকে টেক্কা দিতে তারা দাবি করে যে তাদের বড়ি সেবনের ফলে স্কার্ভি রোগ এরং হাড়ের মেরামত হয়। বলা বাহুল্য তাদের বড়ির মধ্যে টমেটোর কোনো চিহ্ন ছিল না বরং তা জোলাপে ভর্তি ছিল। পরবর্তীকালে বিজ্ঞানীরা এই টমেটো পিলের ওপর গবেষণা চালান তাতে সমস্তটাই পরিস্কার হয়। ১৮৫০ সালের পর আস্তে আস্তে মানুষের ভরসা উঠে যায় এই টমেটো পিলের ওপর। ফলস্বরূপ এই পিলের ব্যবসাও বন্ধ হয়।
শেষপর্যন্ত কিন্তু কেচাপের উন্মাদনা বেশ উপকারী ছিল। টমেটোকে সেই সময় বিষাক্ত ভাবা হতো। তবে ডাক্তার বেনেটের টমেটো পিল আবিস্কারের পর সেই ভ্রান্ত ধারণা মুছে যায়। ডঃ বেনেটের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। ওনার আবিস্কার না হলে হয়তো বিশ্ব টমেটোর স্বাদ থেকে বন্চিত থাকতো।
Discussion about this post