রবিবার সকাল হলেই থলে হাতে নিয়ে বাঙালি ছোটে বাজারে! যার যেমন সামর্থ্য তেমনভাবেই সম্পন্ন হয় বাজার। রবিবারের উল্লেখের কারণ ওটা ছুটির দিন। তাছাড়াও সারা সপ্তাহে তো টুকটাক বাজার লেগেই থাকে। তবে সিংহভাগই হয়ে যায় রবিবার। কিছু বিখ্যাত বাজারের নাম আমাদের সকলের জানা, যেমন- মানিকতলার বাজার, লেক মার্কেট, টেরিটি বাজার, এন্টালি মার্কেট প্রমুখ। তবে আজকে কলকাতা থেকে একটু সরে গিয়ে কথা বলবো। হাওড়ার কালীবাবুর বাজারের নাম শোনেননি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যায়।
আচ্ছা জানা আছে কি? নিউমার্কেটে বাঘের দুধ পাওয়া যায়! ঠিক তেমনই বেশ কয়েক বিঘা জমির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা হাওয়ার শ্রেষ্ঠ কালীবাবুর বাজারে পাবেন দুর্দান্ত সব জিনিস। কি কি পাওয়া যায় তা না হয় নাই বা লিখলাম। নিজেরা গিয়েই দেখে আসবেন না হয়! তবে এই বিখ্যাত বাজারের ইতিহাস একটু জেনে নিন! কথা দিচ্ছি, মন্দ লাগবে না। কালী ব্যানার্জি লেন, গিরিশ ব্যানার্জি লেন এসব রাস্তার নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই! কালীবাবুর বাজারটি এই পরিবারের সাথেই জড়িয়ে আছে। বাগবাজারের রাজা রাজবল্লভ চট্টোপাধ্যায়ের নাতনি দিনমণি দেবীর সাথে বিয়ে হয়েছিল গিরিশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই বিবাহের মাধ্যমে গিরিশবাবু পেলেন মধ্য হাওড়ায় জমিদারী।
দিনমণি দেবী জন্ম দেন তিন পুত্রের – কালীচরণ, নন্দলাল, হরলাল। এই কালীচরণবাবুই ১৮০২ সালে মধ্য হাওড়ার খুরুট রোডে এক বাজার বসান। পরবর্তীকালে সেই বাজারই কালীবাবুর বাজার নামে খ্যাতি লাভ করে। কালীবাবুর বাজারের ওপর মা লক্ষ্মী বড্ডো বেশি কৃপা করেন। প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকার লাভ হয়। কালীবাবুর বাজার ছাড়াও সেখানে আরও কয়েকটি বাজার গড়ে উঠেছিল। তবে টিকে উঠতে পারেনি। শেষ অবধি কালীবাবুর স্বপ্নের বাজারই জিতে গিয়েছিল।
তথ্য ঋণ – অরণিকা ধারা গাঙ্গুলী
Discussion about this post