বাংলাদেশের নানান মিষ্টি নানা ভাবে জনপ্রিয়। এ জনপ্রিয়তার কারণ হিসেবে তার স্বাদই থাকে প্রথমে। তেমনই আরও একটি দুর্দান্ত স্বাদের মিষ্টি হলো গুঠিয়া। এ মিষ্টি বিশেষ করে খ্যাতি পায় বরিশালের নামে। গুঠিয়ার নামকরণ হয়েছে বরিশালেরই বানারীপাড়া উপজেলার একটি ইউনিয়নের নাম অনুসারে। সেই ১৯৬২ সালের কথা। পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া থেকে সন্দেশ তৈরির কৌশল শিখে আসেন সতীশ চন্দ্র দাস নামের এক ময়রা। সাধারণ সন্দেশ তৈরির সাথে নিজের কৌশল মিশিয়ে তিনি এ মিষ্টির জন্ম দেন তিনি। মিষ্টির বয়স ৫০ পেরিয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। তিনি এ সন্দেশের প্রস্তুত প্রণালী শিখিয়েছেন ছেলে শাওন হাওলাদারকে। ভীষণ কঠিন কিছুই নয়। চাইলে আপনিও তৈরি করতে পারেন বাড়িতে।
প্রধান উপকরণ হলো গরুর দুধ। ৬-৭ কেজি দুধ থেকে তৈরি হয় এক কেজি ছানা। সেই ছানার সাথে চিনি মিশিয়ে অল্প আঁচে জ্বালিয়ে নিতে হবে প্রায় ৩০ মিনিট মত। এরপর ৫ মিনিট মত সময় দিতে হবে মিশ্রণটি ঠান্ডা হবার জন্য। ঠান্ডা হলেই তৈরি গুঠিয়ার কাঁচামাল। এবার তাকে কাঠের পাটাতনে বেলে সন্দেশের আকার দিলেই তৈরি গুঠিয়া। এ মিষ্টি থেকে পাওয়া যায় একেবারে খাঁটি দুধের গন্ধ।
শাওন হাওলাদার বলেন, শীতকালে এবং বৈশাখে সন্দেশের চাহিদা বাড়ে। তিনি বলেন, “দুধ, চিনি এবং শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় এখন খুব বেশি লাভ হয় না। তবু ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে মানের সঙ্গে আপস করি না।” বাংলাদেশের এ মিষ্টি কেবল মিষ্টি নয় বরং এক ঐতিহ্য। কেউ কেউ এখনও তা আঁকড়ে পড়ে আছেন। এ মিষ্টির দর বর্তমানে প্রায় সাড়ে পাঁচশো থেকে ছ’শো টাকা কেজি। তবে স্বাদে অতুলনীয় এ মিষ্টি বানিয়ে দেখতে পারেন আপনারাও। কাঁটা তার না পেরিয়ে হেঁশেলে থাক ওপারের স্বাদ। আসলে মনের তো আর বিভেদ হয় না।
Discussion about this post