বাঙালির ক্রীড়া সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ফুটবল। ব্রিটিশদের মাধ্যমে বাংলাতে ফুটবলের প্রচলন হলেও বাংলার ফুটবল ইংল্যান্ডের থেকে খুব বেশি পিছিয়ে ছিল না। সময়ের সাথে সারা বাংলায় ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত হয় বহু সংখ্যক ফুটবল ক্লাব। ফলে বিভিন্ন ফুটবল প্রতিযোগিতাও শুরু হয়। আজও ভারতের জাতীয় ফুটবল মানচিত্রে বাঙালি খেলোয়াড়দের অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। এইবার বিশ্বকাপের মঞ্চে বাঙালির স্বপ্ন পূরণের পথে পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম বাংলার সোনালি সোরেন।
পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানে বাস করেন বছর পনেরোর সোনালি। বয়সে ছোট হলেও সোনালির প্রতিভা নজর কেড়েছে সকল ফুটবলপ্রেমীদের। ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ বর্ষের সেরা মহিলা ফুটবলারের শিরোপা অর্জন করে সোনালি। মাত্র ৯ বছর বয়সে ফুটবল খেলা শুরু সোনালির। সোনালির সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা তার মা। সোনালির মা একজন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। আর্থিক ও সামাজিক শত বাঁধা পেরিয়ে একজন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা হয়ে ওঠার গল্প সাহস জোগায় সোনালিকে।
ফুটবলের শহর নেপলসকে নিজের শহর মনে করতেন স্বয়ং ‘দিয়েগো মারাদোনা’। কলকাতা থেকে নেপলসের দূরত্ব প্রায় ১৫ হাজার কিমি। সম্প্রতি কলকাতা-নেপলস ফ্রেন্ডশিপ কাপের আয়োজন করেছিল ইতালির কনসুলেট জেনারেল। সেই প্রতিযোগিতার সেরা ফুটবলার হন সোনালি। তখন কনসুলেট জেনারেল তাকে নেপলসে ফুটবল প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেয়। সেখান থেকেই পর পর ধাপ পার করে সোনালি আজ বিশ্বকাপের দোড়গোড়ায়। ফিফা অনুর্ধ ১৭ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে সোনালিকে রাখার চিন্তা ভাবনা শুরু করেছেন নির্বাচকরা।
সেরা ফুটবলার সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কারে পুরস্কৃত সোনালি। তিনি ইস্টবেঙ্গলের হয়েও প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। প্রগতিশীল এই সময়ের সমাজ ব্যবস্থায় নারী পুরুষ উভয়ই সমান গতিতে এগিয়ে চলেছে। সমস্ত ভেদাভেদ কাটিয়ে সমাজ আজ উন্মুক্ত সকলের জন্য। কিন্তু দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগুলির পরিস্থিতি শহরের মতো এখনো ততটা ভাল নয়। এই পরিস্থিতি বদলে প্রয়োজন সচেতনতা। তবেই সোনালির মতন আরো প্রতিভার হাত ধরে বিশ্বের দরবারে ভারতের নাম উজ্জ্বল হবে।
চিত্র ঋণ – sportslightmedia.co
Discussion about this post