ধরুন আপনি দুবাইয়ের রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হঠাৎ বেশ খিদে পেল আপনার। পকেট হাতড়ে দেখলেন সেই মূহুর্তে কাছে টাকা-পয়সা বিশেষ নেই। এদিকে চেনা পরিচিতও কেউ কোথাও নেই! এদিকে খাবার জোগাড় করার অন্য উপায়ও কিছু মাথায় আসছে না! কি করবেন? খিদে চেপে রাখে বিমর্ষ ভাবে আবার ঘুরে বেড়াবেন? আজ্ঞে না। পকেটে টাকা-পয়সা না থাকলেও মিলবে খাবার! আবার বিদেশের মাটিতেই! শুনে অবাক লাগছে কি? তবে এটাই বাস্তব! দুবাইয়ের ‘ফাউল ও হামাস’ রেস্তোরাঁ আপনার মুখে তুলে দেবে খাবার।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাইয়ের বার্শা নামক এক শহরের রেস্তোরাঁ ‘ফাউল ও হামাস’। টাকার অভাবে যারা খেতে পান না, এমন কিছু ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে এক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ। টাকা না থাকলেও বিনামূল্যেই খাবার পরিবেশন করা হবে সেই অভুক্ত মানুষগুলিকে। রেস্তোরাঁর বাইরে বড় এক সাইনবোর্ডে লেখাও রয়েছে সে কথা – “আপনি যদি না কিনতে পারেন, তাহলে আমাদের তরফ থেকে আপনার জন্য বিনামূল্যে দেওয়া হবে খাবার। আমাদের এই খাবার ঈশ্বরের পক্ষ থেকে আপনার জন্য উপহার।”
রেস্তোরাঁর মালিক ফাদি আইয়াদের কথায়, বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করার উদ্দেশ্যে ২০১১ সালে তিনি এই রেস্তোরাঁ চালু করেন। পরে তিনি আরও তিনটি শাখা খোলেন। সপ্তাহে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খোলা থাকে এই রেস্তোরাঁ। প্রতিদিন প্রায় ৩৫ জন মানুষ খেতে আসেন এখানে। যে কোনও মানুষই এসে এখানে নিজের পছন্দের খাবার খেতে পারেন। মূল্য চোকাতে না পারলেও কোনও সমস্যাই নেই।
আইয়াদের থেকে আরও জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ান এক ভদ্রমহিলা প্রতিদিন সেখানে বিনামূল্যে নিজের প্রাতঃরাশ সারেন। বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার কারণেই নাকি তার রেস্তোরাঁর ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে, এমনটাও জানান আইয়াদ। তিনি নিজেই বলেন, খাদ্য মানুষের মৌলিক চাহিদা। সেই চাহিদা পূরণের স্বপ্নেই ময়দানে নেমেছেন তিনি। যদি একটু হলেও সফল হতে পারেন, তাহলে মনে আসে এক অদ্ভুত শান্তি। ক্ষুধার্তের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে আজ নিজেও বেশ গর্বিত আইয়াদ। তার এই কাজ প্রেরণা হিসাবে ছড়িয়ে পড়ুক সারা বিশ্বে, এমনটাই কামনা তার। সত্যিই, এই হিংসার পৃথিবীতেও আইয়াদের মত মানুষরাই আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখার সাহস যোগায়। যে স্বপ্ন একদিন ঠিক সফল হবেই।
Discussion about this post