আরবী শব্দ ‘আওদ’ থেকেই ঈদ (Eid) এসেছে। যার অর্থ ফিরে আসা বা বার বার আসা। প্রতি বছরই দুটি ঈদ আসে। ‘ঈদ’ মানে আনন্দ উৎসব। ইদ মানে যা বারবার ফিরে আসে। রমজানের রোজার শেষে এ ইদ আসে বলে এর নাম ‘ইদলফেতর’ (Eid Ul Fitr)। ‘ফিতর’ মানে উপবাস ভঙ্গ করা। তাই বাংলায় এটি রোজা ভাঙার ঈদ।
ইসলামী ক্যালেন্ডার (হিজরি) অনুযায়ী নবম মাসটি হল রমজান মাস। আর দশম মাস অর্থাৎ শাওয়ালের প্রথম দিনটি বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হয় ঈদ। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে, রমজান মাস কখনও ২৯ দিন তো কখনও ৩০ দিন হয়। এই বছর ২ বা ৩ এপ্রিল থেকে রমজান মাস শুরু হওয়ার কথা। যদি তাই হয়, হিসেব অনুযায়ী রমজান শেষ হবে ১ বা ২ মে। প্রসঙ্গত, মুসলিম ধর্মের উত্সব লুনার বা চান্দ্র ক্যালেন্ডারের ওপর নির্ভরশীল। সৌর ক্যালেন্ডারের থেকে চান্দ্র ক্যালেন্ডার ১১ দিন ছোট হয়। তাই প্রতি বছর ঈদের দিন আলাদা আলাদা হয়। রমজান মাস শেষ হবার মোটামুটি ৭০ দিন পরে ও ইসলামিক ক্যালেন্ডার জিরহজ মাসের ১০ তারিখে কোরবানির ঈদ বা বখরি-ঈদ পালন করা হয়।
পুরনো কলকাতার বুকেও খুশির ঈদ মুসলিমধর্মীদের ঘরে ঘরে আনন্দের বার্তা বয়ে আনত। অন্যান্য সব জায়গার সঙ্গে কলকাতাতেও ঈদ-উল-ফিতরের উৎসব হত। বাড়ির গণ্ডি ছাপিয়ে এই খুশির ঢেউ ছড়িয়ে পড়ত চারিদিকে। শহরের নানাদিকে মুসলমান প্রধান এলাকাগুলোতে, বাজারে জমত ভিড়। চা-খানা, হোটেলের সামনে ভিতরে বাইরে বহু রাত পর্যন্ত খানা-পিনা চলত। ফল-শরবৎ, মিঠাই-ফিরনি, রুটি-মাংস। আরও কত কী! পুরনো কলকাতার বুকেও মানুষ জানত ঈদের প্রকৃত তাৎপর্য। ঈদের অর্থ ধৈর্য্য, ভক্তি, দয়া ও সহ্য় ক্ষমতার উদযাপন। সেই সময়ও কলকাতায় মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় মানুষজন নতুন জামাকাপড় পরে এই দিনটা পরিবারের সঙ্গে কাটাতেন। এছাড়া তখনকার সময় থেকেই ঈদের দিনে দরিদ্রদের খাবার দান করারও রীতি রয়েছে।
Discussion about this post