প্রাচীন সময় থেকেই নানান রকমারি শিল্পকলার মিলনস্থল আমাদের এই বাংলা। বাংলার তৈরী শিল্পকলা বরাবরই সমাদৃত দেশ ছাপিয়ে দেশের বাইরেও। বাংলার এই প্রাচীন শিল্প গুলির মধ্যে অন্যতম দ্বারিয়াপুর গ্রামের ধাতু শিল্প। ধাতুর তৈরী বাসন পত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন মূর্তি বাংলার প্রাচীন আভিজাত্যের অন্যতম বাহক। বাংলার এই আভিজাত্যের প্রথা আজও আমলীন দ্বারিয়াপুরের তৈরি ধাতুর শিল্প সামগ্রীর হাত ধরেই।
পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার অন্তর্গত এই দ্বারিয়াপুর গ্রাম। পূর্ব বর্ধমানের একমাত্র ডোকরা গ্রাম এটিই। এখানকার বেশির ভাগ মানুষই পেশায় ধাতু শিল্পী। জানা যায়, এনাদের পূর্বপুরুষরা এই গ্রামে এসেছিলেন মূলত ঝাড়খন্ড, ছত্রিশগড় থেকে। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে নানা গ্রামে মানুষের চাহিদামতো ধাতুর তৈরী নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বানানোই ছিল এঁদের মূল কাজ। বর্তমানে তাদের তৈরি ধাতুর বিভিন্ন মূর্তি ও অসাধারণ শিল্পকর্মেই সেজে ওঠে আমাদের ঘর।
গ্রামের প্রবীণ এক ধাতু শিল্পীর মতে, যখন তারা এই গ্রামে এসেছিলেন তখন মাত্র ৩০ ঘর বসতি ছিল এখানে। তবে সময়ের সাথে চাহিদা বেড়েছে ধাতু সামগ্রীর। যার ফলে এখন তাদের গ্রামের বসতি প্রায় বেড়ে ৭০ ঘর হয়েছে। এখানকার তৈরী ধাতুর মূর্তি ও বিভিন্ন সামগ্রী রপ্তানি করা হয় বাংলার বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও। সময়ের সাথে সাথে এই অঞ্চল পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের জায়গায় পরিণত হয়েছে। এখানকার পর্যটন শিল্পের কথা মাথায় রেখে সুদৃশ্য প্রতীক্ষালয় তৈরি করা হয়েছে। পর্যটকদের যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয় তার জন্য রয়েছে কমিউনিটি টয়লেট ও। পর্যটকদের মতে, “এখানকার প্রত্যেকের অত্যন্ত আন্তরিক ও মার্জিত ব্যবহার প্রতি ভ্রমণপিপাসু মানুষদের মুগ্ধ করে।”
চিত্র ঋণ – অর্ঘ্য সাধু
Discussion about this post