‘বারো মাসের তেরো পার্বণ’ বাঙালির বহু প্রাচীন প্রবাদ, তবে বর্তমানে তা আর মাত্র ‘তেরো তে’ সীমাবদ্ধ নেই। সময়ের সাথে বদলেছে জীবনযাপনের ধরণ। নিজেদের প্রাচীন রীতি-নীতি পালনের পাশাপাশি বিদেশী সংস্কৃতির ছোঁয়াও লক্ষ্য করা যায় বাঙালির জীবনযাত্রায়। ডিসেম্বরের শেষে বাঙালি মেতে ওঠে ক্রিসমাস পালনে। আর ক্রিসমাস যা ছাড়া অসম্পূর্ণ তা হল, ভিন্ন স্বাদ ও ধরণের রকমারি কেক। বিগত ২০০ বছর ধরে টাটকা ও সুস্বাদু কেক বানিয়ে বাঙালির রসনা তৃপ্তি করে আসছে মহানগরীর ‘আজমিরি বেকারি’।
সামনে থেকে আপাত দৃষ্টিতে ছোট্ট একটি সাধারণ দোকান মনে হলেও, মধ্য কলকাতায় অবস্থিত আজমিরি বেকারি বাস্তবের ‘হিডেন জুয়েল’। আজমিরি বেকারির সূত্রপাত হয় শেখ আবদুল লতিফের হাত ধরে। বর্তমানে শেখ খাদিমুল বাশহার ও তার ছেলে হাসিবুল রহমানের হাত ধরেই এগিয়ে চলেছে প্রাচীন এই বেকারি। আজমিরি বেকারির নামকরণ করেছিলেন আবদুল লাতিফ। খাজাবাবার নামেই নামকরণ করা হয়েছিল এই বেকারির।
ব্রিটিশ আমলে তৈরী এই বেকারির, একসময় শহরের চারটি জায়গায় দোকান থাকলেও, বর্তমানে এক জায়গাতেই রয়েছে তাদের দোকান। আজমিরি বেকারির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বর্তমান সময়ের রঙিন আকর্ষণীয় কেকের দিকে না ঝুঁকে, এখানে শুধু তৈরী হয় ফ্রুট কেক। এখানকার কেক তৈরী হয় কাঠের তৈরী উনুনে। বেকারির কেক প্রস্তুতকারী কর্মীদের মতে, “এখানকার তৈরী কেকে অন্যান্য কেকের মতো রং বা সুগন্ধি ব্যবহার করা হয় না। কেকের গুণমান সঠিক রাখার চেষ্টা করা হয় সমসময়।”
বেকারির বর্তমান মালিক শেখ খাদিমুল বাশহার জানান, “প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন এই বেকারি। আমি যখন ক্লাস ৬-এ পড়ি, তখন থেকেই আমি বেকারির বিভিন্ন কাজ সকলের সাথে মিলে মিশে করি। এখানে কেক তৈরীতে সমস্ত ভালো ও টাটকা সরঞ্জাম ব্যাবহার করা হয়। বর্তমানে রঙিন কেকের মাঝে লড়াই করে টিকে আছি। তবে ক্রিসমাসের সময়ে আমাদের ফ্রুট কেকের চাহিদা সারা কলকাতা সহ কলকাতার আশেপাশের অঞ্চলগুলিতেও থাকে।”
Discussion about this post