জাহাজটির অন্ততঃ পাঁচ জন যাত্রী করোনায় আক্রান্ত। কাজেই কোন দেশই জাহাজটিকে তার বন্দরে নোঙর ফেলতে দিতে রাজী হয়নি। ‘এম এস ব্রামার’ নামে ব্রিটিশ জাহাজটি তখন কোনও একটি আশ্রয়ের খোঁজে ক্যারিবিয়ান সাগরের বুকে হন্যে হয়ে ঘুরছিল। ব্রিটিশদের মিত্র দেশগুলিও তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। অবশেষে জাহাজটি এমন একটি দেশ থেকে আশ্রয়ের ইতিবাচক উত্তর পেল, যাদের কথা তারা আশাই করেনি। সেই দেশটির নাম সমাজতান্ত্রিক কিউবা।
ব্রিটিশ সরকার একসময় কিউবার বিপ্লবী সরকারকে সরিয়ে ফেলতে চেয়েছিল। তাই তারা আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কিউবার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ চাপিয়েছিল। অথচ সেই ব্রিটেনেরই একটি জাহাজকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে কিউবা। জাহাজটিতে মোট ৬৮২ জন যাত্রী ও ৩৮১ জন কর্মী মজুত। তার মধ্যে পাঁচ জন করোনা আক্রান্ত রোগীও রয়েছেন। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, কিউবার হাভানার মুখপাত্র প্যাট্রিক ওপম্যানের স্পষ্ট জবাব, একমাত্র মানবিকতার স্বার্থেই কিউবা যুক্তরাজ্যের জাহাজটির প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তাঁর মতে, পারস্পরিক সাহায্যের মাধ্যমেই মানুষ একমাত্র করোনার মোকাবিলা একমাত্র করতে পারে।
সমাজতান্ত্রিক কিউবা জাহাজটির করোনা আক্রান্ত যাত্রীদের চিকিৎসা পরিষেবাও দেবে বলে ঘোষণা করেছে। যতদিন না তাঁর সুস্থ হচ্ছেন জাহাজটি কিউবাতেই থাকবে বলা হয়েছে এ কথাও। পৃথিবীতে একদিকে করোনার আতঙ্ক এতটাই গ্রাস করেছে যে চারদিকে প্রায় সাহায্যের জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। বিপদে পাশে দাঁড়ানো তো দূর, স্বার্থের জন্য নিজের আখের গোছাতেই ব্যস্ত মানুষ। ঠিক তার উল্টোদিকে এই অস্থির সময়েও কিউবার মত একটা ছোট্ট দেশ মানবিকতার পাঠ দিয়ে গেল সবাইকে। শিখিয়ে গেল ভালবাসা দিয়ে সব কিছু জয় করা সম্ভব, তা সে যত বড় ব্যধিই হোক না কেন!
প্রতিবেদক – রাজদীপ বিশ্বাস
Discussion about this post