ঘন বন দ্বারা পরিবেষ্টিত একটি দ্বীপ হল কোকোজ আইল্যান্ড। শোনা গিয়েছে, হাজার কোটি টাকার গুপ্তধন সংরক্ষিত রয়েছে এই দ্বীপে। প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত কোকোজ আইল্যান্ড বর্তমানে কোস্টারিকার অংশ। ঘন সবুজ ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্যে ঢাকা এই দ্বীপটি কোস্টারিকার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে রয়েছে। মাইকেল ক্রিকটন ‘জুরাসিক পার্ক’-এর প্লট ভেবেছিলেন ৩০০ ফিটের খাড়াই পাহাড়, কালো বালির সৈকত, অসংখ্য নদী আর ঝরনায় সাজানো এই রহস্যময় দ্বীপের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়েই।
৪০০ রকমের কীটপতঙ্গ, ৯০ রকমের পাখির প্রজাতি, বাঘ এবং সমুদ্রের হাতুড়ি-মাথা হাঙর সমন্বিত এই দ্বীপে প্রায়ই চলে গুপ্তধন-শিকারিদের আনাগোনা। কারণ, তাদের মূল লক্ষ্য রহস্যময় এই দ্বীপে লুক্কায়িত ১ বিলিয়ন ডলার বা ৭১,৫০,২৫,০০,০০০ টাকার সম্পদ। ১৮২০ খ্রিস্টাব্দ থেকেই রটনার সূত্রপাত যখন স্প্যানিশ শক্তি লাতিন আমেরিকা দখল করে। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে পেরুর স্থানীয় বাসিন্দারা। শোনা যায়, নানান সময়ে অসংখ্য অভিযাত্রী, দ্বীপটিতে অভিযান চালিয়ে গুপ্তধন উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছে। যদিও কোনও প্রামাণ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। গুজবও হতে পারে! উনিশ শতকের শেষভাগে কোকোজ দ্বীপের গভর্নর হয়েছিলেন জার্মান অভিযাত্রী অগস্ট গিজলার। দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করার পর দ্বীপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সুড়ঙ্গ কাটেন তিনি। কিন্তু সে যাত্রায় কয়েকটি মুদ্রা ছাড়া তার ভাগ্যে আর কিছু জোটেনি। ১৯০৮ সালে হতাশাগ্রস্ত গিজলার দ্বীপ পরিত্যাগ করেন। প্রায় পাঁচশোর অধিক অভিযানের পর শেষ পর্যন্ত কোস্টারিকা সরকার দ্বারা এই দ্বীপে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
অভিযাত্রী বা পর্যটকদের কাছে বর্তমানে অগম্য এই দ্বীপ। যদিও স্কুবা ডাইভিং করে, জাহাজে চড়ে কিংবা আকাশপথে ঈশ্বর দর্শনের মত দ্বীপ দর্শন করা যায়। কোস্টারিকা সরকারের বনকর্মীদের কড়া পাহারায় আপাতত সুরক্ষিত ক্রান্তীয় অরণ্যের বিরল জীববৈচিত্রে ভরা ‘কোকোজ আইল্যান্ড’!
Discussion about this post