দেখো আলোয় আলো আকাশ দেখো আকাশ তারায় ভরা” পূর্ণিমা রাতের তারারা বড্ড ফ্যাকাসে। ঘন অমবস্যার আকাশ সেই তুলনায় শত হীরে শোভিত। আর আশ্বিনের অমাবস্যাটা আরও আকর্ষণীয়। আলোর মালায় সেজে ওঠে প্রতি বসতির অলিগলি। দেওয়ালি বা দীপাবলির শুভ মূহুর্ত। আলোয় আলোয় ভরে উঠেছে উঠোন, দালান, তুলসী তলা। যেন সারা বছরের আনন্দ এতদিন মুষ্ঠিবদ্ধ ছিল।
‘দীপাবলি’ মানে প্রদীপের সমষ্টি। আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে অবধি মোমবাতি আর মাটির প্রদীপই ছিল দীপাবলির একমাত্র অলঙ্কার। সময় এগিয়েছে। মানুষের চাহিদা বদলেছে। ঝোঁক বেড়েছে চীনা পণ্যের উপর। আর চীন বরাবর বাজার ধরায় ওস্তাদ। ক্রেতাদের মন বুঝে ঝটপট চাহিদা অনুযায়ী দ্রব্য প্রস্তুতিতে দক্ষ। কলকাতা শহরে আলো কেনাবেচার বড় বাজারগুলোর মধ্যে এজরা স্ট্রীট অন্যতম। আর এখন থেকেই সেখানে ক্রেতাদের সমাগম চোখে পড়ার মতো। রকমারি লোভনীয় আলোর ঝুড়ি। মাত্র ১৫-২০ টাকা থেকে ১৫০০-২০০০ টাকার টুনির সম্ভার। ছোট টুনি,বড় টুনি, জলের সংস্পর্শে আলো জ্বলা সেন্সর টি লাইট, রাইস বাল্ব, ডি.জে লাইট কি নেই। আর মূল্য? অবশ্যই মধ্যবিত্তের বাজেটে। এলইডি স্টিক ২০০-২৫০ টাকার উপর। এই টুনিগুলো খুব একটা কারেন্ট বিলেরও তারতম্য ঘটায় না। তাই এককথায় মধ্যবিত্তের পকেটসুলভ সরঞ্জাম।
তবে খুব ধীর গতিতে হলেও ক্রমশঃ মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে ভারতীয় সিংহ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্রেতা জানালেন, তাঁর দোকানে দেশীয় আলোর হয়ে মূল লড়াইটা দিচ্ছে দিল্লি ও মুম্বইয়ের বিভিন্ন সংস্থা। আরেক বিক্রেতাও জানালেন সব হিসেব ওলট-পালট করে ভারতীয় আলোর চাহিদা নাকি তুঙ্গে। আজকাল জোরালো চিনা টুনির আলোর মালার থেকে টুনি লাগানো ভারতীয় মোমবাতির বাজার আশাতীত ভালো।
অনুপ সাহার মতো বেশ কিছু ক্রেতার বক্তব্য, তারা চিনা-ভারতীয় এসবে যেতে চান না। ন্যায্য দামে ঠিকঠিক জিনিসই তারা খুঁজছেন। অর্থাৎ তারা এমন জিনিস চান যাতে মন ভরবে সাধ্যের মধ্যেই। তবে ভারতীয় আলোর এই সামান্য লড়াই অসামান্য হয়ে দেখা দিতে পারে। তার জন্য মন আর পকেট দু’দিক ভরিয়ে দেওয়ার কৌশল রপ্ত করতে হবে ভারতীয় আলোর প্রস্তুতকারকদের।
চিত্র ঋণ – চাঁদ কুমার ঘোষ
Discussion about this post