এই মুহূর্তে দেশ তথা সারা বিশ্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী ঠিক কী? উত্তর হল কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিট। করোনা যুদ্ধের মূল অস্ত্রই হল, করোনার সঠিক পরীক্ষা। তাই বিশ্ব জুড়েই গণহারে করোনা টেস্টিং কিট তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষতঃ ভারতে বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যা হওয়ার দরুণ, অচিরেই হাজার হাজার টেস্টিং কিটের প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ কিটই যথেষ্ট দামী এবং অন্য দেশ থেকে আমদানিকৃত। ফলতঃ অর্থনৈতিক দিক থেকেও সমস্যায় পড়ছে ভারত। এই সমস্যার সমাধানে, করোনা চিকিৎসায় নতুন এক পদক্ষেপ নিল বাংলা। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণার এক জৈব-প্রযুক্তি সংস্থার উদ্যোগে এবার বাজারে আসতে চলেছে বিশ্বের সবথেকে সুলভ ‘করোনা টেস্টিং কিট’। যা ইতিমধ্যেই চাহিদার তুঙ্গে।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার বকরাহাটে অবস্থিত ‘জিসিসি বায়ো-টেক কোম্পানি’ নামক সংস্থার বানানো এই কিটগুলির দ্বারা মাত্র ৯০ মিনিটেই করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করা সম্ভব। তবে অন্যান্য কিটের দাম যেখানে হাজারের উপর সেখানে এই ‘কিট’গুলির দাম শুনলে চোখ খানিক কপালে তুলতে হয় বৈকি! মাত্র ৫০০ টাকা! সব থেকে উল্লেখযোগ্য বিষয়, এগুলি বানাতে প্রয়োজনীয় যাবতীয় সামগ্রী বাইরের আমদানিকৃত নয়। বরং বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে নিজস্ব পরীক্ষাগারেই বানানো হয়েছে সেগুলি।
গণহারে উৎপাদনের জন্য ইতিমধ্যেই ‘আইসিএমআর’-এর সম্মতি পেয়ে গেছে সেই সংস্থা। প্রসঙ্গতঃ খবর পেয়ে এই ‘কিট’গুলি ব্যবহারের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু)। এমনকি পরীক্ষার জন্য প্রায় হাজারের ওপর ‘কিট’ তাদের পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পুরো ব্যাপারটিতে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই বিশেষজ্ঞ ড. রাজা মজুমদারের কথায়, এই ‘কিট’ আবিষ্কারের ফলে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল দেশগুলি এবার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করতে সক্ষম হয়ে উঠবে। ‘সিএসআইআর’ বিশেষজ্ঞ শমিত আঢ্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব-প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর কৌস্তভ পান্ডা সহ দলের অন্যান্য তরুণ বিজ্ঞানীদের সহায়তায় আবিষ্কৃত এই ‘কিট’ করোনা চিকিৎসার পথে ভারত তথা বিশ্বকে আরও একধাপ এগিয়ে দেবে বলেও জানান ড. মজুমদার।
Discussion about this post