পুরুলিয়ার কথা বলতেই মাথায় আসে পলাশের বন, টিলা পাহাড়, আদিবাসী উৎসব, ড্যাম আরও কত কী! লালমাটির রূপকথায় মোড়া এই জেলায় পুজো-পার্বনও বেশ প্রাণবন্ত। পুরুলিয়ায় পুজোর ঢল বেশি। কিছু জেলায় বেশ কয়েকটি কালীপুজো রীতিমতো নজরকাড়া। তেমনই একটি পুঞ্চার ‘চরণ পাহাড়ি কালী’। যা নিয়ে গল্প অনেক। এখনো সেই মন্দিরের পুজোয় হিন্দু-মুসলান নির্বিশেষে সবাই চাঁদা দেন। প্রতি বছর কালীপুজোর সময় দূর-দূরান্ত থেকে সহস্রাধিক ভক্ত জমায়েত হন সেখানে।
শোনা যায় এক মুসলমানই নাকি এই কালি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সাত দশকেরও আগে দেবীর স্বপ্নাদেশে টিলার উপর পুজোর সূচনা করেছিলেন এক মুসলিম পুলিশ আধিকারিক। কালীপুজোয় পুরুলিয়া ছাড়াও ভিন জেলা এমনকি পাশ্ববর্তী রাজ্য থেকেও সেখানে ভিড় জমান ভক্তের দল। পুঞ্চা থানার এক ওসি ছিলেন জিটি লতিফ। কথিত আছে, স্বপ্নে তাঁকে দেখা দিয়েছিলেন মা কালী। দেবী আদেশ দিয়েছিলেন মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে। পরের দিন সকালে হাঁটতে বেরিয়ে তিনি এক পাহাড়ের চূড়ায় কালো পাথরের ওপর দেবীর পায়ের ছাপ দেখতে পান। তখন চারপাশের খান কুড়ি গ্রামের মানুষকে খবর দেন তিনি। সবাই মিলে সেই পাহাড়ের চূড়ায় এক মিলিটারি ক্যাম্পে মা কালীর আরাধনা শুরু করেন।
শুরুর দিকে ছোট্ট মাটির কুঁড়ে ঘর বানিয়ে দেবীর আরাধনা করা হত। তারপর বাংলা ১৩৫৭ সনে জিটি লতিফ সেখানে এক মন্দির গড়ে তোলেন। শোনা যায় এখনও পাহাড়ের উপরের কালী মন্দিরেই পুজো হয়। মায়ের টানে ১৬০টি সিঁড়ি বেয়ে ১৩০ ফুট উঁচুতে থাকা মন্দিরে ছুটে যান ভক্তরা। হাজার হাজার ভক্তের সমাগমে গমগম করে চরণ পাহাড়ি কালী মন্দির।
Discussion about this post