পাশ্চাত্য থেকে শুরু করে প্রাচ্য– বড়দিন মানে বিশ্বের প্রায় সকল দেশবাসীর বহু প্রতীক্ষিত এক উৎসব। আর বড়দিন মানেই কেক। নানান রকম কেকের আয়োজন বড়দিনের আমেজকে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে। সেই উৎসবের আমেজই রীতিমতো কড়া নাড়ছে দরজায়। বিভিন্ন দোকানে নানান রকম কেকের বাহার সাজানো। তবে সুস্বাদু এই কেক যে অন্ধকারের গভীরতা বোঝানোর মাপকাঠি হয়ে উঠতে পারে তা ভাবনারও অতীত। কিন্তু সত্যিই এমন এক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে ব্রুকলিনবাসী।
বিশ্বযুদ্ধ তখন তুঙ্গে। আমেরিকা তখন ব্যস্ত নিজেদের নৌবাহিনী বাঁচাতে। ব্রুকলিন শহরের কয়েক জন বাসিন্দা ঠিক করলেন শহর জুড়ে ব্ল্যাকআউট ঘটানোর। অর্থাৎ সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হবে। অন্ধকার করে দেওয়া হবে গোটা শহর। তাহলেই জার্মান যুদ্ধবিমান নৌবাহিনীর ঘাঁটি বুঝতে পারবে না আর বোমাও ফেলতে পারবে না। কিন্তু মুশকিল হল শহরবাসীকে বোঝানো যে তারা কতটা অন্ধকার করবেন। কারণ অনেকে হয়তো ছোট আলো জ্বেলে রাখলেন বাড়িতে, কেউ বা রাস্তায় আলো দিয়ে রাখলেন। তখন এগিয়ে এল এবিনজার বেকারির মালিক। বানিয়ে ফেললেন কুচকুচে কালো কেক, যাতে দেশবাসী চারপাশে ঠিক ততটাই অন্ধকার করে রাখেন। নাম দেওয়া হল ‘ব্ল্যাকআউট কেক’। ব্রুকলিনে নেমে এল অন্ধকারের ঘনঘটা। আর এভাবেই রক্ষা পেল নৌবাহিনী।
এই কেক এখন ইতিহাসের অংশ ছাড়া আর কিছুই নয়। নেই আর সেই এবিনজার বেকারি। সত্তরের দশকেই দেউলিয়া হয়ে গিয়ে হারিয়েছে বেকারির তকমা। কিন্তু ব্রুকলিনে ব্ল্যাকআউট কেক নামে অন্য দোকানের সুস্বাদু কেক পাওয়া যায়। তবে সেযুগে দেশের নৌবাহিনীকে বাঁচাতে এবিনজার বেকারির এই অনবদ্য পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। যাকে বলে কেক ও বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনবদ্য মিশেল!
চিত্র ঋণ – https://theviewfromgreatisland.com/
Discussion about this post