‘প্রিয় খাবার কী?’ এখনকার জেনারেশনকে এ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলে প্রায়ই ভেসে আসে একটাই উত্তর – ‘বিরিয়ানি।’ সঙ্গে সঙ্গে জিভে জল। বিরিয়ানির হাঁড়ির পাশ থেকে যাবার সময়ে সুঘ্রাণ যেন প্রেমকে দূর থেকে জড়িয়ে নেওয়ার সমান। আর যদি হয় পুরনো ঢাকার বিরিয়ানি, উফ্, তাহলে কোনো কথাই নেই। পুরনো ঢাকার কাচ্চি বা হাজী বিরিয়ানির নামে জিভে জল আসে না এমন মানুষ মেলা ভার।

‘বিরিয়ানি’ শব্দটা এসেছে ‘বিরিয়ান’ থেকে। ফার্সী এ শব্দের মানে হল রান্নার আগে ভেজে নেওয়া। আর তাই বুঝতেই পারছেন রান্নার পদ্ধতি অনুসারে এই নামকরণ। তবে পুরনো ঢাকার হাজী বিরিয়ানি বেশ নামকরা। ১৯৩৯ সালে হাজী গোলাম হোসেন সাহেবের হাতে এর যাত্রা শুরু। তবে বর্তমানেও সবার প্রথম পছন্দের তালিকায় খোঁজ মেলে হাজী বিরিয়ানির। সকালের জল খাবার থেকে রাতের ডিনার অবধি বিরিয়ানি দিয়ে পূর্ণ হয় বলে জানা গিয়েছে। হাজির বিরিয়ানির কর্মীরা বলেন, সকালে একটু কম চাপ থাকলেও ১২টার পর থেকে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে।

এ ছাড়াও রয়েছে কাচ্চি বিরিয়ানি। ‘কাচ্চি’ অর্থাৎ কাঁচা। সুগন্ধি চালের সাথে এই বিরিয়ানিতে সরাসরি গো-মাংস রান্না করা হয়। কখনও আলুর সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয় টক দই। ঢাকার দোকানগুলোতে এ বিরিয়ানির দাম ১০০ থেকে ৩০০ টাকা। প্রতিদিনই জমতে থাকে মানুষের ভিড়। আর সেই ভিড়ই বুঝিয়ে দেয় বিরিয়ানির জনপ্রিয়তা ঠিক কতটা। পুরনো ঢাকায় পা রাখলে অবশ্যই চেখে দেখবেন ‘পুরান ঢাকার বিরিয়ানি।’ এই বিরিয়ানির স্বাদ না নিলে সিকি ভাগ এ জীবনের অনেকটাই বৃথা বলা যেতে পারে।

মতিঝিল ঘরোয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, স্টার হোটেল, বাবুর্চিখানা ও নর্থ সাউথ রোডের হোটেল আল-রাজ্জাকেরও কদর কম নয়। সকাল থেকে একটানা সারারাত এসব দোকানে চলতে থাকে বিরিয়ানির কারবার। তবে রাত বাড়ার সাথে সাথে সমাগমের গ্রাফ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে। এখনকার নানান সুস্বাদু খাবার থাকলেও ‘পুরান ঢাকার বিরিয়ানি’র কদর কোনোদিনই কমবার নয়।
প্রচ্ছদ চিত্র ঋণ – Mariam’s Cooking







































Discussion about this post