বাঙালি মিষ্টি খেতে ভালোবাসে। তাই বলে কি নোনতা বাংলায় মিলবে না? খাদ্যরসিক বাঙালি মিষ্টির সঙ্গে সঙ্গে নোনতা খেতেও সমান ভাবে পারদর্শী। বহুকাল থেকেই আত্মীয় বাড়িতে মিষ্টির সঙ্গে নোনতা পরিবেশ করার প্রচলন রয়েছে। সেই সব নোনতা খাবারের বেশিরভাগটাই এসেছে ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকে, বা দেশের বাইরে থেকেও। বাঙালি তার স্বভাবসিদ্ধতায় ‘আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে’ সেই সব খাবারকে নিজেদের করে নিয়েছে। নামকরণও করেছে নিজেদের মত করেই। ‘সামোসা’ হয়ে গেছে সিঙ্গারা, ‘নমকিন’ হয়ে গেছে নিমকি।
বিজয়া দশমীর পর থেকে আত্মীয়দের বাড়ি বিজয়া করতে যাওয়ার চল সেই অতীতকাল থেকেই রয়েছে। মূলত গুরুজনদের প্রণাম, বন্ধুস্থানীয়দের সঙ্গে কোলাকুলি এবং বিভিন্ন রকমের নারকেল নাড়ু এই বিজয়া করার উপাদান। আর সেসবের মধ্যে নিমকির স্থানটিও কিন্তু পাকা। আগে নিমকি বাড়িতেই বানানো হত, এখন ব্যস্ততার যুগে বাজারচলতি নিমকি দিয়েই কাজ সারা হয়। রাজস্থান, পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশের ‘মাঠরি’র সঙ্গে নিমকির সাদৃশ্য আছে। এই নিমকি বা নমকিন সাধারনত জলখাবার হিসাবে চায়ের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। অঞ্চলভেদে বিভিন্ন ভাবে নিমকি বানানো হয়ে থাকে। তবে মূল উপাদান ও পদ্ধতির খুব একটা বদল হয়না।
নিমকি তৈরির প্রক্রিয়াও বেশ সহজ। বাজারে না কিনে, বাড়িতেই বানিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিতে পারেন আপনিও। নিমকি তৈরির জন্য প্রথমে একসঙ্গে একটু বেশি পরিমাণ ময়দা মেখে নিতে হবে। মাখার আগে ময়দায় দিতে হবে নুন, কালোজিরে, সোডা ও তেল। ময়ান ঠিকঠাক দেওয়ার উপরেই কিন্তু নির্ভর করে নিমকির মুচমুচে হওয়া। ময়দা মাখা হয়ে গেলে তাতে তেল মাখিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর লেচি বানিয়ে পাতলা করে বেলে নিয়ে তাকে ছুরি দিয়ে নিমকির আকারে কেটে নিতে হবে। সেগুলিকে ডুবো তেলে ভেজে নিলেই নিমকি তৈরি। এরপর এয়ার টাইট কৌটোতে ভরে রাখলেই ব্যস! কেল্লা ফতে!
Discussion about this post