সামনেই ২১-এর বিধানসভা ভোট। যথারীতি সমস্ত রং-এর দলের ভোট প্রচার পরিস্থিতি এখন তুঙ্গে। জোর কদমে সবাই লড়ছে বাংলার মাসানদের জন্য। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে একটি বিষয় অনেকেরই চোখের আড়াল হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির আগুন যেমন জলছে তেমনই দাবানলে পুড়েছে জঙ্গলমহলের জঙ্গল। বাইরের দেশে আগুন লাগলে আমাদের মধ্যে অনেকেই আওয়াজ তুলি কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ভরিয়ে তুলি। অথচ বাঁকুড়া ও পুরিলিয়ার পাহাড়ের জঙ্গলের দাবানল নিয়ে সেভাবে আওয়াজ তুলতে কাউকে দেখা যায় নি। যদিও এখন পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে এসছে। কিন্তু এই সময়েই এক অদ্ভুত চিত্র দেখা গেল বাঁকুড়ায়। বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পরিবেশ রক্ষার দাবিতে সরব হয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়ালেন অধ্যাপক ড: স্বদেশ মণ্ডল।
ডেইলি নিউজ রিলের তরফে অধ্যাপকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান যে তাঁর উদেশ্য জনগণকে পরিবেশ সম্বন্ধে সচেতন করা। তিনি বলেন যে নুন্যতম ভোট পেলেও তিনি বুঝবেন তিনি কিছু মানুষকে পরিবেশ সচেতন করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে তথাকথিত বড়ো দলের সমর্থন না থাকলেও বাঁকুড়া ও সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৫০ এর বেশি স্বেচ্ছাসেবী দল তাঁকে প্রচারে সাহায্য করেছে। তিনি বলেন বহু সাধারণ মানুষও তাঁর প্রচারে আর্থিকভাবেও এগিয়ে আসছেন। যদি অন্যান্য দল এই দাবি তুলতে পারেন যে শুধু ভোট কাটানোর জন্য বিরোধী দল থেকে তাঁকে দাড় করানো হয়েছে, তখন তাঁর কী প্রতিক্রিয়া হবে? উত্তরে অধ্যাপক অত্যন্ত অমায়িক ভাবে উত্তর দেন, বাক স্বাধীনতার জোরে অনেকেই অনেক কিছু বলতে পারেন কিন্তু তিনি তাঁর জায়গায় অনড় হয়েই দাঁড়িয়ে থাকবেন।
স্বার্থের এই যুগে যখন অনেকেই আখের গোছাতে ব্যস্ত তখন পরিবেশের স্বার্থে এমন উদ্যোগ মানুষকে অবাক করে তোলে। প্রকৃতিকে আমরা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার ও অপব্যবহার দুই করে আসছি। কিন্তু প্রকৃতি মা’কে ভালোবাসতে পেরেছি ক’জন। বিগত বছরেও আমফান আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে যে প্রকৃতি চাইলে কী না করতে পারে! কিন্তু এই বাজারে যখন প্রচারের আলো শুষে নেয় প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলো তখন একজন সাধারণ মানুষ কতটা এগিয়ে যেতে পারেন লড়াইয়ের ময়দানে সেটাই দেখার এখন।
Discussion about this post