দেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীরাই। কথার কথা নয় বাস্তব। যতবারই বাংলাদেশ অগ্নিগর্ভ হয়েছে , শাহবাগ অভয় দিয়েছে জাগরণের। আশ্বাস দিয়েছে সে দেশের ছাত্রদল। শিক্ষার্থী,সাধারণ মানুষ নির্বিশেষে আবারও এদিন শাহবাগ গর্জে উঠছে মৌলবাদী, দাঙ্গাকারীর বিরূদ্ধে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়া দীঘির এক পুজো মন্ডপে। সেখানে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই একদল লোক পুজো মন্ডপে হনুমান মূর্তির পায়ের উপর রেখে আসে ইসলাম ধর্মগ্রন্থ কোরান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র উত্তাল হয়ে পড়ে দেশ। ভাঙচুর করা হয় পুজো মন্ডপ, মন্দির। ভেঙে ফেলা হয় মন্দিরের প্রতিমা। বাংলাদেশী সংখ্যালঘুদের বাড়িতেও হামলা করে দাঙ্গাবাজরা। একে একে কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুড়িগ্রামে ছড়িয়ে পরে সাম্প্রদায়িকতার বিষ। রংপুরের পীরগঞ্জে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় সংখ্যালঘুদের বাড়িতে। সংঘর্ষের বলি হয় অনেকগুলি তাজা প্রাণ। যে দেশ ভাষা আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধর্ম-বর্ণ- জাতি নির্বিশেষে লড়াই করেছে এক সাথে; তার এহেন পরিস্থিতি কি সত্যিই মানা যায়? তবে কি শুধুই মুখে সম্প্রীতির বুলি আওড়ানো,ভিতরে সবই ফাঁপা!
এর উত্তর খুঁজতে আবারও পথে নেমেছে ছাত্রদল। সোমবার শাহবাগ অঞ্চলে সকাল ১০.৩০ নাগাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এক শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করে। শিক্ষার্থী ছাড়াও সোমবারের মিছিলে সামিল ছিলেন সাধারণ মানুষরাও। শুধু হিন্দুরাই নন, এই মিছিলে যোগদান করেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীরাও। “একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেক বার”, “বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, জঙ্গিবাদের ঠাঁই নাই” স্লোগানে জেগে ওঠে শাহবাগ অঞ্চল।
দুর্গোৎসবে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই মূলত নাশকতার ফন্দি এঁটেছিল একদল মৌলবাদী। সরকার যাতে এর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয় এই নিয়ে কয়েক দফা দাবিও জানানো হয় এদিন মিছিলে। যে দেশের গর্ভে জন্ম সহস্র বীরের, যে দেশের জাতীয় কবি বলে যান ‘একই বৃন্তের দুইটি কুসুম হিন্দু মুসলমান’। সে দেশে কি সত্যিই এসব মানা যায় একবিংশ শতাব্দীতে!
Discussion about this post