মানুষ আজকাল সামাজিকের পরিবর্তে আত্মকেন্দ্রিক জীব হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পরিচিতদের খোঁজ নেওয়া, তাদের পরিবার ভালো আছে কিনা, সেসব নিয়ে ভাবনা, এগুলো যেন আজকাল লোকজনের মধ্যে দেখাই যায়না। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, কারোর সঙ্গে দাঁড়িয়ে দুদণ্ড কথা বলাটাকেও যেন এখন বিলাসিতা মনে করা হয়। কার জীবনে কি চলছে, কার মনের অবস্থা কেমন চলছে, সেসব নিয়ে অন্য মানুষ আর ভাবেন না। নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি হতে হতে আজকে যেন মানুষ নিজেই নিজের পরিবার হয়ে উঠেছে। আর এই ধারণাকেই পাল্টে দিতে এবারে একেবারে নতুন একটি উদ্যোগ নিয়ে হাজির হয়েছে ‘খামখেয়াল’। এইবছর ‘খামখেয়াল’ একটি বিশেষ প্রদর্শনী সমারোহ অনুষ্ঠিত করছে, যার মূল লক্ষ্য হতে চলেছে গান-বাজনা, কেনা-কাটা, গল্প-আড্ডা সবমিলিয়ে সবাইকে একটা মজাদার সন্ধ্যা উপহার দেওয়া। পাশাপাশি, যারা আজকের কঠিন কর্পোরেট বাজারীকরণের যুগে দাঁড়িয়ে অন্য পথে হাঁটার সাহস দেখিয়েছেন, যিনি নিজের শিল্পকে সবার মাঝে পৌঁছে দিতে চাইছেন, তাদের পাশে দাঁড়ানো।
Art & Autumn 2024 শীর্ষক এই প্রদর্শনী সমারোহ চলবে আগামী ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর গ্যালারি গোল্ড অডিটোরিয়ামে। এই প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকবে ২৬টি ব্র্যান্ড ও সাথে থাকবেন অনেক কলাকুশলীরাও। পাশাপাশি, এবারের এই সমারোহে রয়েছে আরো কিছু নতুন চমক। বাংলার ঐতিহ্য বাংলার মাটির পুতুলের কাজকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এবারের সমারোহে বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করা হবে গবেষক শুভঙ্কর দাসকে। তিনি বহু বছর ধরে বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই মাটির পুতুলের উপরে গবেষণা চালিয়েছেন। ডেইলি নিউজ রিল টিমের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ‘খামখেয়াল’ টিমের এক সদস্যা জানালেন, “এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা প্রতিটি শিল্পীর পাশে দাঁড়াতে চাই, প্রতিটি ক্ষুদ্র উদ্যোগের পাশে দাঁড়াতে চাই। সঙ্গেই সবাইমিলে একসাথে থাকাটাকেও আমরা একটা পুনরায় একটা অভ্যাসে পরিণত করতে ইচ্ছুক। প্রাইভেসি খুঁজতে গিয়ে আমরা যেভাবে একা হয়ে যাচ্ছি, সেটাকেই পাল্টে দিতে আমাদের এই উদ্যোগ।”
এবারে যারা এই সমারোহে নিজেদের ব্র্যান্ড নিয়ে আসবেন, সবাইকে বাংলার শিল্পীদের নিজের হাতে তৈরী মাটির পুতুল উপহার দেবে ‘খামখেয়াল’। এই সমারোহে উপস্থিত থাকবেন, অভিনেত্রী তথা চলচ্চিত্র পরিচালিকা অপরাজিতা ঘোষ, থাকবেন চন্দ্রবিন্দু ব্যান্ডের অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, এবং থাকবেন অভিনেতা তথা পরিচালক অভিজিৎ গুহ। ‘খামখেয়াল’-র তরফে আরো জানানো হলো, “আমাদের প্রদর্শনীতে মূলত আমরা সমাজ সচেতনতা নিয়ে কথা বলি। আমাদের প্রদর্শনী সম্পন্ন হয় কোনো না কোনো একটা সামাজিক কাজ দিয়েই। প্রতিবছরের ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প থেকে শুরু করে, পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামে পুজোর পোশাক বিতরণ, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্প করা, সবকিছু নিয়েই আমাদের একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে। তাই, যত বেশি মানুষ আমাদের সাথে যুক্ত হবেন, ততই সুষ্ঠুভাবে আমরা সবকিছু করে উঠতে পারব।”
Discussion about this post