আপেল গাছের কথা বললে প্রথমেই আমাদের মনে আসে বিজ্ঞানী নিউটনের কথা। অনেকে রসিকতা করে বলেন, নিউটনের মাথায় সেদিন আপেলটি না পড়লে এত কঠিন মহাকর্ষ সূত্র পড়তেই হত না। তবে বিজ্ঞানপ্রেমীদের মতে, মহাকর্ষ সূত্র সেই সময় আবিষ্কার না হলে, আমাদের বিজ্ঞান বেশ কিছু ধাপ পিছিয়ে যেত। কিন্তু গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিটেনে হওয়া বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ইউনিসের তাণ্ডবে উপড়ে গেল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নিউটন অ্যাপেল ট্রি’।
শুক্রবার ইংল্যান্ডের উপকূলবর্তী শহর লিভারপুলে শুরু হয় এই ঝড়ের তাণ্ডব। দেশজুড়ে বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে পরিষেবা চালু রেখে উদ্ধারকাজে চালানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন। ঝড়ের জেরে বহু উড়ান বাতিল করা হয়েছে। লন্ডনসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিমান বন্দরগুলিতে প্রায় দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ আটকে পড়েছেন। এই ভয়াবহ ঝড়ের জেরেই উপড়ে যায় প্রাচীন এই গাছটি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনাটিকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে ঝড়ে যে গাছটি উপড়ে যায় সেটি নিউটনের সূত্র আবিষ্কারের সেই আসল গাছ নয়। এটি বিজ্ঞানী নিউটন যে গাছের নীচে বসে মহাকর্ষ সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন সেই গাছ থেকে ক্লোন করা হয়েছিলো। বাগান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের কাছে গাছটির আরো একটি ক্লোন রয়েছে। শীঘ্রই বাগানে সেটি রোপণ করা হবে।
বাগানের তত্ত্বাবধায়ক ড. স্যামুয়েল ব্রকিংটনের মতে, “১৯৫৪ সালে গাছটি রোপণ করা হয়েছিলো এবং ৬৮ বছর ধরে বাগানের ব্রুকসাইডের প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে ছিলো এটি”। তিনি আরও জানান, “এটি একটি ক্লোন করা গাছ ছিলো। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন তিনটি গাছ রয়েছে বলেও জানান তিনি। ইংল্যান্ডের লিঙ্কনশায়ারের উলসথর্প মানর গ্রামে নিউটনের বাড়ির সামনে মূল গাছটি রয়েছে। সেটি এখনো বেঁচে আছে।” স্থানীয়রা জানান, “গাছটির আপেল বেশ গুণগত মানের। এর প্রজাতির নাম ‘ফ্লাওয়ার অব কেন্ট’।” এই গাছের চারা নিউটনের স্মৃতিতে বিভিন্ন সময়ে ইংল্যান্ডের নানা স্থানে রোপণ করা হয়েছে। এমনকি ভারতের পুনের ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সেও আনা হয়েছিল এ গাছের চারা।
Discussion about this post