এবছরের শীত যেন ডুমুরের ফুল। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পার করেও জাঁকিয়ে শীত অনুভব করতে পারছেন না রাজ্যবাসী। নভেম্বরের শেষের দিকে বঙ্গে হিমেল পরশ লেগেছিল বটে, তবে এই মাসের শুরুতে আর তেমন ঠান্ডা বোঝার উপায় নেই। তাতে কী? আমেজটাই তো আসল! বাঙালিদের পুরনো সোয়েটার, চাদর, টুপি- এসব তো ইতিমধ্যে বেরিয়ে পড়েছেই। কিন্তু প্রতিবছর শীতকালে একটু শপিং তো করতেই হবে। সে জাঁকিয়ে শীত পড়ুক বা হালকা শীতে। আর সেই সুযোগটা হাতছাড়া করতে চান না মরসুমী ব্যাবসায়ীরাও। সুন্দর সুন্দর নানা রকমের শীতবস্ত্রের পসরা নিয়ে হাজির হয়ে যান বিভিন্ন জায়গায়। সেরকমই এক জনপ্রিয় পোশাক মার্কেট হল হাওড়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্কুরহাটি পোষাক হাট।
হাওড়ার মঙ্গলা হাটের পাশাপাশি সম্প্রতি বেশ কিছু বছরে ক্রমশ জনপ্রিয়তা বেড়েছে অঙ্কুরহাটি সাপ্তাহিক এই পোশাক হাটের। শুক্রবার করে বসে এই মার্কেট। পাইকারি থেকে আরম্ভ করে হাজারো খুচরো ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় থাকে বারো মাসই। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মরশুমে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী জিনিসপত্রের যোগান দিয়ে চলেছেন এখানে। প্রতি বছরের মত এবছরেও কালীপুজোর পর থেকে দোকান থরে থরে সেজে উঠেছে শীতবস্ত্রের নানান সম্ভারে। সেই ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত চলবে শীতের বাজার। বাচ্ছাদের সোয়েটার জ্যাকেট, টুপি, হাত মোজা থেকে শুরু করে বড়দের শীতের চাদর, জ্যাকেট, সোয়েটার, মোটা কাপড়ের গেঞ্জি, হুডি, মাফলার, কমফোর্টার সহ যেকোনো ধরনের শীতবস্ত্রই পাওয়া যায় এসব দোকানে।
শুধুমাত্র বড় বড় ব্যবসায়ীরাই নন অনেক খুচরো ক্রেতারাও বাজার করেন এই হাট থেকে। এমনকি আর্থিকভাবে সচ্ছল ক্রেতারা যেমন আসেন তেমনি স্বল্প আয়ের মানুষেরাও অল্প দামে শীতবস্ত্র কিনতে এসব দোকানে ভিড় জমান। তবে অতিমারী হানা দেওয়ার পর থেকে এখানকার ব্যবসার হাল বেশ খারাপ হয়েছে। অঙ্কুরহাটি হাটের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ী মুন্না মিদ্যার কথায়, শুধু শীতের মরশুম বলে নয়, এ বছরে বারো মাসের ব্যবসারই হাল খুব খারাপ। করোনার আগেও নোটবন্দি, জিএসটি এসব কিছু মিলিয়েই বাজার আর আগের মতন সরগরম থাকে না। তবু যেটুক হয় সেটুকুই তাদের লাভ।
বড় বড় দোকানের অতিরিক্ত দাম এড়াতে শীতে উষ্ণতার খোঁজে আপনিও আসতে পারেন এই অঙ্কুরহাটি হাটে। কীভাবে যাবেন? অঙ্কুরহাটি চেকপোস্ট যাবার কিছুটা আগেই বাম হাতে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন অঞ্চলেই দেখতে পাবেন অঙ্কুরহাটি পোশাক হাট। সকাল থেকে বিকেল চারটে-পাঁচটা পর্যন্ত চলে বারো মাসের অঙ্কুরহাটি হাট।
Discussion about this post