দীর্ঘ করোনা মহামারীকে কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। সময়ের সাথে এই দুই বছরের ক্ষত ভুলে স্বাভাবিক। তবে এই খারাপ সময় কেটে গেলেও তাদের কথা ভুললে চলবে না, যারা মহামারীর সময়েও নিজেদের চিন্তা না করে ছুটে বেড়িয়েছেন মানবসেবার কাজে। তাদের মধ্যেই অন্যতম চৈতন্য ধাম নবদ্বীপের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আগামী’। এটি নবদ্বীপের সবচেয়ে প্রবীণ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির মধ্যে একটি। ২০১৭ সালের ২৬ আগস্ট বন্যার জন্য সাহায্য সংগ্রহের মাধ্যমে পথ চলা শুরু ‘আগামীর’। এরপর ২০১৯ সালে সরকারি স্বীকৃতি অর্জন করে তারা। শুরু থেকে আজ, কেটে গিয়েছে ৫ বছর। বর্তমানে শুধু নবদ্বীপ নয়, নদীয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনে পরিণত হয়েছে ‘আগামী’। তাই প্রতি বছরের মত এবারেও তাদের জন্মদিন পালন ও নবদ্বীপের সুপ্ত প্রতিভাদের সকলের সামনে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে ২৮ আগস্ট এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করেছিল ‘আগামী’। অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল নবদ্বীপের রবীন্দ্র সংস্কৃতি মঞ্চে।
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের মতে, এই অনুষ্ঠানে দর্শক সংখ্যা ছিল হাজারেরও কিছু বেশি। অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘আগামীর’ সদস্যা প্রতিভা মন্ডলের ভায়োলিনের দ্বারা মুগ্ধ করা জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর কুচিপুড়ি ধরণের নৃত্য পরিবেশন করেন ‘আগামীর’ আরেকজন একজন সদস্যা রিমা সরকার। এই অনুষ্ঠানে ‘আগামীর’ পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হয় নবদ্বীপের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থান অধিকারী কৃতী শিক্ষার্থীদের। অনুষ্ঠানের মধ্যসময়ে ছিল নবদ্বীপের অন্যতম ব্যান্ড ‘রিদম র্যাম্পেজের’ মুগ্ধ করা অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের শেষ ভাগে মঞ্চে ছিল ১০ টি খোলের মাধ্যমে সারা নবদ্বীপের আবেগ শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর পূজো। চৈতন্যদেবের এরকম পূজো দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি বহু দর্শক। তবে অনুষ্ঠানের শেষ দিকের সবচেয়ে মূল আকর্ষণ ছিল সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যতম পরিচিত মুখ পারমিতা প্রামাণিক। সোশাল মিডিয়া যিনি পরিচিত ‘পারমিতার কবিতা’ নামেই। আগামীর অন্যতম সদস্য শিক্ষক সৌরভ সরকারের মতে, ” এই অনুষ্ঠানের পেছনে এক মহৎ উদ্দেশ্য আছে। এই অনুষ্ঠানের প্রবেশপত্র থেকে প্রাপ্ত অর্থ খরচ করা হবে দুস্থ প্রান্তিক শিশুদের শিক্ষার অগ্রগতিতে।”
অনুষ্ঠান শেষে সময় তখন ঘড়িতে ১১ টা। তখনও প্রেক্ষাগৃহে ছিলেন শ’পাঁচেক দর্শক। অনুষ্ঠানের শেষ ঘোষণা হয় আগামীর সম্পাদকের হাত ধরে। আগামীর সম্পাদক শুভঙ্কর চ্যাটার্জী জানান, “আগামী বছরগুলিতেও এভাবেই আগামীর জন্মদিন পালন হবে। তবে আপাতত এক বছরের জন্য মানবসেবায় ডুবে থাকব আমরা। পরবর্তী সেবামূলক কাজ দুর্গা পুজোতে ছোট বাচ্চাদের পোষাক বিতরণের জন্য সাধারণ মানুষদের কাছে সাহায্যের আবেদনও জানান তিনি।”
Discussion about this post