হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরেই আলোর উৎসব দীপাবলি। যদিও এবারের দীপাবলিতে অনেক কিছু বিধিনিষেধ, তাই ইচ্ছে থাকলেও নিয়মের বেড়াজালে আটকে সাধারণ মানুষ। দীপাবলীর আগে থেকেই কলকাতার সহ গোটা দেশ সেজে ওঠে আলোর মালায়। আমাদের ছোটবেলায় বিকেল থেকেই মাটির প্রদীপ ও মোমবাতি বসানো শুরু হয়ে যেত বাড়ির ছাদে, উঠোনে, বারান্দায়। দূর থেকে তা অমাবস্যার রাতে ঝলমল করত। সেই মোমবাতির দিন এখন শেষ। বাহারি আলোক-সজ্জার প্রায় পুরোটাই দখল নিয়েছে এলইডি আলো।
প্রাক দীপাবলি শব্দটার মধ্যেই জড়িয়ে রয়েছে কলকাতার সেই বিখ্যাত সেই দুটো জায়গা, এজরা স্ট্রিট আর চাঁদনী। দুর্গাপূজো শেষ হতে না হতেই কলকাতার এই সব জায়গাগুলো সেজে ওঠে দীপাবলির আলোয়। চাঁদনী কিংবা এজরা স্ট্রিটে গেলে মনে হয় এ যেন শহরের ভেতরে অন্য এক শহর, আলোর শহর। ভাইরাসের থাবায় এ বছরে কলকাতা প্রাণহীন মহানগরী। উৎসব আছে প্রাণ নেই, আলো আছে কিন্তু আনন্দ নেই। এবছরের আলোর বাজার ঘুরতে গিয়েও যেন পদে পদে দেখা গেলো তারই প্রতিফলন। আলোর দাম এখন আগুন ছোঁয়া।
চেন, মালা, ফুলগাছ থেকে প্যানেলে নানান ধরণের জ্বলতে থাকা আলো চোখে পড়লো। আলোর প্যানেলে কী ডিজাইন হবে আপনার মোবাইল থুড়ি স্মার্টফোন থেকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এবছর মাল্টি কালার টুনি লাইটের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ থেকে ৭০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। সিঙ্গেল কালার টুনি লাইটের চেনের দাম প্রায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা। অন্যদিকে এলইডি লাইটের দাম বেড়ে প্রায় ২৫০ টাকা। আবার লাইটিং করা প্রদীপের চেনের দক্ষিণা প্রায় ২০০টাকা।
আলোর সাম্রাজ্যে ঘুরতে ঘুরতেই কানে এলো “৫০ টাকায় জলে জ্বলছে আলো, নিয়ে যান।” সেই বিচিত্র আলো চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। সত্যিই জলের মধ্যে জ্বলছে আলো, জল থেকে সেই আলো উঠিয়ে নিলেই তা নিভে যাচ্ছে। চাঁদনির আলোর বাজারে হঠাৎ দৃষ্টি আকর্ষণ করলো এক অদ্ভুত আলো। বিক্রেতা জানালেন এ বছরই বাজারে আসা এই ‘ফ্যাশনেবল’ আলোর নাম নাকি ‘পজল লাইট’।
ইচ্ছা থাকলেও এ বছর যেন উপায় নেই। দুর্গা পুজোর মতো কালী পুজোও এবার বড্ড নিষ্প্রাণ। আলো থাকলেও তা সৌন্দর্যহীন। তবে এই পরিস্থিতি কেটে যাবে এটাই আমাদের সকলের বিশ্বাস। আপাততঃ আপনার বাড়িকে উৎসবের মরসুমে সাজিয়ে নিতে হাতে খানিক সময় নিয়ে ঢুঁ মারতে পারেন এজরা স্ট্রিট অথবা চাঁদনিতে। দরদাম করে কিনে নিতেই পারেন আপনার পছন্দসই আলো।
চিত্র ও তথ্য ঋণ – চাঁদ কুমার ঘোষ, তীর্থ নারায়ণ ভট্টাচার্য্য
Discussion about this post