“বস্তু নয়, মানুষ হিসেবে বাঁচার সময় ও সুযোগ পেয়েছি আমরা”- বলছেন একজন মানুষ। আর মধ্যযুগ নয়, এই কথা তিনি বলছেন এই ২০২৪ সালে দাঁড়িয়েই! কেন! কারণ তিনি একজন যৌনকর্মী। তাঁদের মত ‘প্রানী’দের তো সমাজে স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার দূরে থাক, একজন মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জায়গাও নেই। তাঁরা শুধুমাত্র মানুষের কামনা নিরসনের যন্ত্র মাত্র! অন্তত আমাদের ও আমাদের আশেপাশের দেশগুলিতে তাই। কিন্তু বেলজিয়াম করে দেখাল অসাধ্য সাধন।
বেলজিয়ামে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসেই একটি ঐতিহাসিক আইন কার্যকর হয়েছে, যা এই যুগে প্রথমবার যৌনকর্মীদের শ্রমের অধিকার ও সুরক্ষাকে নিশ্চিত করছে। এই আইন অনুযায়ী, যৌনকর্মীরা নিয়মিত কর্মসংস্থান চুক্তির অধীনে কাজ করতে পারবেন এবং অন্যান্য পেশার মতো স্বাস্থ্যবীমা, পেনশন, মাতৃত্বকালীন ছুটি, ও বেকারত্ব সহায়তার সুবিধা পাবেন। তাঁরা যে কোনো সময় ‘খদ্দের’ প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন এবং নিজের শর্ত অনুযায়ী কাজ করবেন। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষার জন্য জরুরি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে এবং নিয়োগকর্তারা বিশেষ অনুমোদন নিয়ে যৌনকর্মী নিয়োগ করতে পারবেন। তবে, দালালদের কার্যক্রম এখনও অবৈধ থাকছে।
বেলজিয়াম দেশটিই ২০২২ সালে যৌনকর্মকে ডিক্রিমিনালাইজ করেছিল এবং এই নতুন আইনটি সেই উদ্যোগকে আরও খানিকটা এগিয়ে নিয়ে গেল। এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে যৌনকর্মীদের পেশাকে আইনের আওতায় এনেছে এবং মানুষ হিসেবে কর্মীদের মর্যাদা দিয়েছে। বেলজিয়ামই হয়েছে বিশ্বের প্রথম দেশ, যে যৌনকর্মীদের জন্য সম্পূর্ণ শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করেছে। তবে কিছু এলাকায় এই আইন বাস্তবায়ন করতে সরকারকে সমস্যার মুখোমুখি হতে হতেই পারে, কতদূর কাজ এগোয় তা দেখা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
Discussion about this post