“মেয়েটি দায়িত্বজ্ঞানহীনের মত রাত্রিবেলা একলা সেমিনার হলে গিয়েছিল কেন?” “মেয়েটি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল” “মেয়েটি নিশ্চয়ই সঠিক পোশাক পরেনি” “মেয়েটি কি ল্যাম্পপোস্টের তলার মেয়ে ছিল?” “মেয়েটি ছেলেদের সঙ্গে বেহায়ার মত কথা কেন বলেছিল?” “মেয়েটির আচার-ব্যবহার ভালো নয়” “মেয়েটির শাড়ির আঁচল বুকের ডান পাশ দিয়ে ছিল? নাকি বাঁ পাশ দিয়ে?”- এমনই আরও অসংখ্য মন্তব্যের মুখে ঝামা ঘষে দিতে এবং ‘তিলোত্তমা’র জন্য বিচার চাইতে সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে মাঝরাতে পথে নামছেন মেয়েরা।
সম্প্রতি কলকাতার অত্যন্ত পরিচিত সরকারি হাসপাতাল আরজি করে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা আজ আর কারোরই অজানা নয়। পেরিয়ে গিয়েছে অনেকটা সময়। একজন ব্যতীত কারো নাম উঠে আসেনি, পাওয়া যায়নি কোনো প্রমাণ, কোনো ‘মোটিফ’। কিন্তু সাধারণ মানুষ ফুঁসে উঠেছেন। তরবারিতে শান দিচ্ছেন মেয়েরা। সমস্ত বয়সের, সমস্ত স্তরের মেয়েরা ধীরে ধীরে জড়ো হচ্ছেন। জড়ো হচ্ছেন প্রান্তিক লিঙ্গ গোষ্ঠী। আরজি করের প্রিন্সিপালের মন্তব্যের রেশ ধরে তাঁদের স্লোগান, “মেয়েরা, রাত দখল করো।”
এই কর্মসূচী শুরু হয়েছিল যাদবপুর, বাংলা অ্যাকাডেমি এবং কলেজ স্ট্রিটকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে তা সারা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু মেয়েরা বা প্রান্তিক লিঙ্গ গোষ্ঠী নয়- সারা দিয়েছেন পুরুষেরাও। কলকাতা এবং কলকাতার আশেপাশের অঞ্চল তো বটেই মালদা, বর্ধমান, বীরভূম, শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ প্রভৃতি জায়গাতেও গৃহীত হয়েছে একই কর্মসূচী। ১৪ আগস্ট সারা বাংলার রাস্তায় রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াবেন মেয়েরা। সেদিনও কি তাঁদের শাড়ির আঁচল বা ঠোঁটের সিগারেট নিয়ে মন্তব্য শুনতে হবে? অপেক্ষা ১৪ আগস্টের। কর্মসূচীর আয়োজকদের একজন শতাব্দী দাস জানালেন, “একটি কর্মসূচীতে হয়ত কোনো বদল আসবে না, কিন্তু তাই বলে কোনো কর্মসূচীই নেবো না, তা কী হয়? এটি রাজনৈতিক রঙবিহীন সাধারণ মানুষের জমায়েত। সকলে যুক্ত হন।”
Discussion about this post