বাঙালির ঘরে ইলিশের কদর বরাবরের। ধোঁয়া উঠা খিচুড়ির সাথে গরম গরম ইলিশ ভাজা না হলে বাঙালির বর্ষাকালটা ঠিক জমে না। শুধু কী ভাজার আয়োজন? ভাপা ইলিশ, সর্ষে ইলিশ, দই ইলিশ, ইলিশ পাতুরি থেকে শুরু করে ইলিশের পাতলা ঝোল অথবা ইলিশ দোপেঁয়াজা – সবই ঠাঁই পায় ভোজন রসিক বাঙালির পাতে। এককথায় বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে ইলিশকে গোল দিতে পারে এমন মাছ প্রায় নেই বললেই চলে।
কিন্তু ইলিশ যদি খাঁটি না হয় তাহলে বাঙালিদের সেদিনকার মত বাজার করা একদম মাটি। তাই ভালো ইলিশ চিনতে গিয়ে কেউ হয়তো আঙুলে টিপে দেখেন, কেউবা ফুলকা দেখে বিচার করেন তাজা ইলিশ। আবার কেউবা তরতাজা চেহারা দেখেই ধরে নেন কোনটা টাটকা ইলিশ। কিন্তু মশাই! বাজারে তো নানান রকমের ইলিশ, আবার আছে সমুদ্রের ইলিশ। তার ওপর আবার নকল ইলিশ- চৌক্কা, সার্ডিন ইত্যাদি। এত কিছুর ভিড়ে কোনটা সেরা, কোনটায় বেশি স্বাদ অথবা কোনটাই বা টাটকা- এ নিয়ে মহা ঝামেলায় পড়েন অনেক ক্রেতা।
তবে কি ভালো ইলিশ চাইলেই চেনাটা দুষ্কর? নাহ, একেবারেই তা নয়। ভালো ইলিশ চেনবার উপায় আছে বৈকি! প্রথমেই মাছ কেনার সময় দেখে নেওয়া উচিত তা শক্ত আছে কিনা, তাতে মাছটি টাটকা কিনা বুঝে নেওয়া যায়। নদীর ইলিশ বিশেষ করে পদ্মা ও মেঘনার ইলিশ একটু বেশি উজ্জ্বল ও রুপোলি ভাবটাও বেশি থাকে সাগরের ইলিশের তুলনায়। আবার চোখ দেখেও ইলিশ চেনা যায়। ভালো ইলিশের চোখ হয় স্বচ্ছ। অনেকেরই দাবি, লাল চোখ ইলিশের চেয়ে নীল চোখের ইলিশের স্বাদ বেশি। যে ইলিশের মুখ যত সরু তার স্বাদ তত বেশি। সঙ্গে ইলিশ কেনার আগে অবশ্যই মাছের কানকো ভালো করে দেখে নেওয়া উচিত। তাজা ইলিশের কানকোয় থাকে একটা লালচে ভাব। আর সবশেষে কেনার আগে মাছটির গন্ধ নেওয়ার কথাও অনেকেই বলে থাকেন। স্বাদের রাজা ইলিশের বিশেষ গন্ধের জন্যও সুখ্যাতি রয়েছে। তাই যে ইলিশ থেকে পরিচিত গন্ধ পাওয়া যায়, সেই ইলিশ সবসময় টাটকা হয়। যদি গন্ধ না পাওয়া যায় সেই মাছ না কেনাই ভালো।
তাহলে রইল বাকি টাটকা একটা ইলিশ বাজার থেকে নিয়ে এসে জমিয়ে পছন্দমতো একটা পদ রান্না করা। তাই আর দেরি কীসের? উপায়গুলো মাথায় রেখে ভালো একটা ইলিশ দিয়ে বানিয়ে ফেলুন নিজেদের পছন্দমতো রেসিপি।
Discussion about this post