ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযান পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে চলেছে। আর রাজনীতি, কূটনীতি, রণনীতি সমস্ত নীতিতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় একজনই; সাধারণ মানুষ। যুদ্ধের ইতিহাস কতটা ভয়াবহ সেই স্মৃতি এখনো ভ্রষ্ট হয়নি মানব স্নায়ুকোষে। এই রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে রাজনৈতিক ক্ষতের থেকেও হয়তো বেশি ভয়ঙ্কর রূপ নিতে চলেছে খাদ্যসঙ্কটের পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধি!
ইউক্রেনের মাটি থেকে জলবায়ু,শস্য উৎপাদনের জন্য যা যা প্রয়োজনীয় উপাদান প্রকৃতির আশীর্বাদে সবই সে দেশের রয়েছে। ইউরোপের রুটির ঝুড়ি তো অবশ্যই, সূর্যমুখীর তেল উৎপাদনেও ইউক্রেনের সারা বিশ্বে অবস্থান প্রথম! সেই দেশ একাই ভরাতে পারে ৬০ কোটি মানুষের পেট। বিশ্বের ১৬% ভুট্টা এবং ১৮% যব উৎপাদনের কারখানা সে একাই! কৃষিজ ফসল উৎপাদনে ইউক্রেনের অবস্থান বরাবরই প্রথম সারণীতে। আর বিশেষজ্ঞদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ঠিক এই কারণটাই।
ইউরোপের বহু দেশের পাশাপাশি ভারতসহ এশিয়ার অনেক দেশেই ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে কৃষিজ পণ্য রপ্তানি করে আসছে। সার উৎপাদন ও রপ্তানিতে ইউক্রেনের ভূমিকা ভীষণভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এবং এদের মধ্যে সকল পণ্যই উৎকৃষ্ট মানের। এই রকম অবস্থায় দাঁড়িয়ে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আবশ্যিক ভাবে দাম বাড়তে চলেছে খাদ্য পণ্যের। আর এতে সাধারণ মানুষের কতটা ক্ষতি হবে তা আর বলার অপেক্ষায় থাকেনা। ওই যে প্রবাদেই আছে, “রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়।” ইতিমধ্যে সারা বিশ্ব জুড়ে তীব্র হচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দার ঢেউ। দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের যুদ্ধে যে কতটা ক্ষতি হতে পারে সেই আন্দাজ সাধারণের ও আছে। সুতরাং রাশিয়া যতই নারাজ হোক এই সেনা অভিযানকে ‘যুদ্ধ’ হিসেবে ঘোষণা করতে, এর ফলাফল ভোগ করতে হবে সারা বিশ্বকেই!
Discussion about this post