বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে সব জিনিসের দামই প্রায় আকাশ ছোঁয়া। সেখানে ১ টাকার মূল্য আর এমন কি! সত্যি বলতে গেলে, আজকাল ১ টাকায় প্রায় কিছুই হয় না। কিন্তু জানেন কি এখনও মানিকদার দোকানে মাত্র ১ টাকায় পরোটা-তরকারি পাওয়া যায়। বিশ্বাস হচ্ছে না তো? কিন্তু এটাই সত্যি, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে মানিক সরকার ও তাঁর ভাই সঞ্জয় সরকার মাত্র ১ টাকায় পরোটা বিক্রি করে আসছেন।
হুগলির শ্রীরামপুরের বেল্টিং বাজার বাসস্ট্যান্ডের ঠিক পাশেই রয়েছে মানিক সরকারের পরোটার দোকান। পথচারী থেকে শুরু করে অফিসযাত্রী, প্রায় সকলেরই পছন্দের জলখাবারের জায়গা এই মানিকদার দোকান। প্রতিদিন কমবেশি ২৫০০ থেকে ২৮০০ পিস পরোটা বাড়ি থেকে বানিয়ে আনেন দোকানের মালিক। আর রোজই প্রায় সকাল ১১ টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায় সব পরোটা।
২০১৪-এ দাঁড়িয়ে যেখানে ৩৫টাকা কেজি ময়দা আর ১৬০টাকা লিটার তেলের দাম সেখানে এই মানিকবাবু মাত্র ১টাকায় পরোটা বিক্রি করছেন। সঙ্গে দিচ্ছেন আলু-মটরের তরকারি বিনামূল্যে। ভোর হতে না হতেই দোকানের সামনে পড়ে যায় লম্বা লাইন। খরিদ্দার সামলাতে সামলাতে হিমশিম খান দোকানদার। মানিকবাবুর থেকে জানা যায়, “বর্তমান সময়ে পরোটার যা চাহিদা তাতে বিক্রি করে কুলিয়ে ওঠা যায় না। দূর থেকেও বহু মানুষ ছুটে আসেন এই ১টাকার পরোটা খেতে। প্রতিদিন পার্সেলেই যায় ৫০০ থেকে ৮০০ পরোটা। বেলা হতে না হতেই শেষ হয়ে যায় সব পরোটা।”
জানা যায়, প্রায় ৩৫ বছরের এই দোকান শুরুর দিন থেকেই মানিকবাবু এক টাকার পরোটা বিক্রি করে আসছেন। তবে আগে এই পরোটার সাইজ বড় থাকলেও এখন জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির কারণেই পরোটার সাইজ একটু ছোট হয়েছে। কিন্তু দাম বাড়েনি দীর্ঘ এত বছরেও। তবে এই দামে পরোটা বিক্রির উপরেও লাভ রাখেন তিনি। মানিকবাবুর দোকানের এক খরিদ্দার যিনি পেশায় একজন ভ্যান চালক তাঁর থেকে জানা যায়, “কম পয়সায় পেট ভরা খাবার তিনি পেয়ে যান এই দোকানে। প্রতিদিন সকালে তিনি এই দোকানে আসেন জলখাবার খেতে। শ্রীরামপুরে একমাত্র মানিকদার দোকান ছাড়া আর কোথাও এক টাকার পরোটা পাওয়া সম্ভব নয়।”
Discussion about this post