ফেব্রুয়ারি থেকেই বসন্তের শুরু, মার্চ পর্যন্ত চলে তার রেশ। মনোরম আবহাওয়া, শিরশিরে ঠান্ডা বাতাস, হালকা উষ্ণতার অনুভূতি – সারাদেশে ভ্রমণের জন্য আদর্শ এই ঋতু। মানুষ যখন নির্জনতার শান্তি খোঁজে ঠিক তখনই ব্যস্ত শহরকে পিছনে ফেলে ছোটে পাহাড়ের নেশায়। মার্চ মাসে যখন কোনও সুন্দর জায়গা দেখার কথা আসে তখন শুধুমাত্র হিমাচল বা উত্তরাখন্ড নয় বরং উত্তর-পূর্ব ভারতের সুন্দর জায়গাগুলিকেও সেই তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম মনোরম স্থান হল সিকিম। হিমালয়ের কোলে অবস্থিত সিকিম রাজ্যটি স্বপ্নের মতোই সুন্দর। পারলে ঘুরে আসতে পারেন সিকিম থেকে।
লাচুং থেকে ইউমথাং ২৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। লাচুং একটি মনোরম পাহাড়ি গ্রাম যা ফুলের উপত্যকা বা ইউমথাংয়ের প্রবেশদ্বার হিসেবেও পরিচিত। গ্যাংটক থেকে ১৫০ কিমি দূরে সমুদ্রতল থেকে ৩৫৬৪ মিটার উঁচুতে অবস্থিত উপত্যকা ইউমথাং। ইউমথাংয়ের আর এক নাম হল ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’। বলতে গেলে, এপ্রিল-মে মাসে এখানে যেন জলসা বসে যায় ফুলের। বিভিন্ন প্রজাতির রডোডেনড্রন, প্রিমুলা ও আরও নানা ধরনের ফুলের সমারোহে এই সময় সত্যিই নন্দনকানন হয়ে ওঠে এই উপত্যকা। এই উপত্যকা শীতকালে পুরোপুরি ঢেকে যায় শ্বেতশুভ্র বরফ চাদরে, তখন তার এক অন্য রূপ। বাকি সময় সবুজ ঘাসের কার্পেটে মোড়া এই উপত্যকা, আর নীলরঙা নদীর বয়ে চলা মুগ্ধ করবে ভ্রমণ পিপাসু মানুষজনকে।
ইউমথাং উপত্যকা একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য এবং এর মনোরম দৃশ্যের জন্য পরিচিত৷ এটি বরফে ঢাকা পর্বত, রঙিন ফুলের ক্ষেত এবং ঘন জঙ্গল দ্বারা বেষ্টিত। উপত্যকার শুরুতেই রয়েছে একটি উষ্ণ প্রস্রবণ। এই উপত্যকার আরেকটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ হল থাংগু লেক। এই হ্রদটি উপত্যকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং এর নীল জলের জন্য পরিচিত। থাংগু লেক একটি পবিত্র হ্রদ বলে বিবেচিত হয়। তাই এটি হিন্দু এবং বৌদ্ধ উভয় তীর্থযাত্রীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। ইউমথাং থেকে জিরো পয়েন্টের দূরত্ব ২৩ কিমি, চাইলে আপনি সেখান থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। চীন সীমান্ত কাছাকাছি বলে সাধারণ পর্যটকদের এই পর্যন্তই যাওয়ার অনুমতি মেলে।
ইউমথাং উপত্যকা ট্রেকিং এবং মাউন্টেন বাইকিংয়ের জন্যও একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। এখানে বেশ কয়েকটি ট্রেকিং ট্রেইল রয়েছে যা ট্রেকার্সদের বিভিন্ন দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ করে দেয়। সত্যি বলতে গেলে, সিকিমের ইউমথাং উপত্যকা একটি সুন্দর এবং মনোরম স্থান। এটি প্রকৃতি প্রেমী, ট্রেকার এবং মাউন্টেন বাইকারদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হতে পারে। এই স্থানটির উচ্চতা বেশি, তাই এটি পরিভ্রমণের সর্বোত্তম সময় মার্চ এবং জুনের মাঝামাঝি। ইউমথাং উপত্যকা যেতে গেলে আপনাকে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি বা বিমানে বাগডোগরাতে নামতে হবে। এবার বাগডোগরা বা নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া করে যেতে হবে গ্যাংটক। গ্যাংটক থেকে লাচুং এবং লাচুং থেকে যেতে হবে ইউমথাং ভ্যালি।
Discussion about this post