যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ক্রমশ উন্নতি ঘটছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের। দেশে সরকারি চিকিৎসার সমান্তরালে বিকল্প ব্যয়বহুল পরিষেবা থাকলেও, পশ্চিমবঙ্গের সিংহভাগ মানুষ সরকারি পরিষেবার ওপরই নির্ভরশীল৷ আর এই সরকারি হাসপাতালের সাফল্যের কারণেই আজ গর্বিত সারা বাংলার চিকিৎসক মহল। জটিল অস্ত্রোপচারে এক বাংলাদেশি তরুণীর শরীরে কৃত্রিম জননাঙ্গ প্রতিস্থাপন করে নজির গড়ল দক্ষিণ 24 পরগনার ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
সূত্রের খবর, মে মাসের প্রথমদিকে বাংলাদেশের এক তরুণী হাসপাতালের আউটডোরে দেখাতে আসেন। তার শরীরে যোনি ও জরায়ু ছিল না। ওই তরুণীর পরিবার জানিয়েছে, “মেয়ের বিয়ে ঠিক করলে, তখনই তরুণী পরিবারকে সব কিছু জানায়।” গভীর অবসাদে চলে যায় গোটা পরিবার। ঠিক তখনই এক বছর আগের এই অস্ত্রোপচারের ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো চোখে পড়ে তরুণীর পরিবারের। কিন্তু চিন্তার কারণ ছিল, বাংলাদেশে এ ধরনের চিকিৎসার কোনও সুযোগ নেই।
তখন তারা সেই ভিডিয়োর সূত্র ধরে পশ্চিমবঙ্গের ডায়মন্ড হারবারে চলে আসেন। চিকিৎসকরা জানান, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ ধরনের রোগকে বলা হয় ‘মুলেরিয়ান অ্যাজিনেসিস’। এই রোগ পৃথিবীতে বিরল। তখন ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল প্রসূতি বিভাগ তাঁর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয়। ডাক্তারি পরিভাষায় এই রোগের অস্ত্রোপচারকে বলা হয় ‘ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি’। গত ১৫ মে এই জটিল অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করেন ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. মানস সাহা জানান, “অতীতেও এই ধরনের অস্ত্রোপচার এই মেডিক্যাল কলেজে হয়েছে। এই অস্ত্রোপচার বেশ খানিকটা ঝুঁকিপূর্ণ। ওই তরুণীর যৌন জীবনযাপনে কোনও সমস্যা হবে না। তবে মা হতে গেলে সারোগেসি অর্থাৎ অন্য মহিলার গর্ভ দ্বারা সন্তানের জন্মের ব্যবস্থা করতে হবে৷” সফল অস্ত্রোপচার শেষে সম্পূর্ণ সুস্থ ওই তরুণী বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছেন। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স-সহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
Discussion about this post