কলকাতা তার আপন খেয়াল সব মানুষকেই আপন করে নিয়েছে কালের প্রবহমান সময়ে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রতি কোণায় কলকাতার বুকে ছড়িয়ে ইতিহাসের পাতা। বছর প্রায় শেষ। উষ্ণতার পারদ কমতে লেগেছে। সামনেই আরেক উৎসব বড়দিন। কেকের উৎসব। কে আর কারা কলকাতায় প্রথম কেক বানিয়েছিল সেটাও একটা ইতিহাস। খুবই সহজেই অনুমেয় ব্রিটিশরাই কলকাতায় প্রথম কেক বানায়।
যতদূর জানা যায়, ১৮৩০ সাল নাগাদ ডেভিড উইলসন নামে এক সাহেব এই শহরে প্রথম কেক তৈরি করেছিলেন। তিনি ১৮৪০ সালে ধর্মতলায় অকল্যান্ড হোটেল খুলেছিলেন। তার আগে তিনি বেকারি চালাতেন৷ অকল্যান্ড হোটেল পরে নাম বদলে হয় গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল। অতীতে কলকাতায় কেক বলতেই এসে পড়ত গ্রেট ইস্টার্নের নাম। অনেকদিন পর্যন্ত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলের বেকারি থেকে পছন্দের ক্রিসমাস কেক কিনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিত অফিস-ফেরতা মানুষ।
আদিকাল থেকে কলকাতায় কেকের ঠিকানা ধর্মতলা বা নিউ মার্কেট। সেই হগ মার্কেটের যুগে সুদূর বগদাদ থেকে নাহুম ইজরায়েল নামের এক ইহুদী কলকাতায় এসে কেকের দোকান শুরু করেন। তাঁর দোকানটি খুব তাড়াতাড়িই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ইংরেজ আমলে সাহেবদের বিশেষ পছন্দের ছিল সেই দোকানটি। তারপর নাহুমের কেকের চাহিদা অন্য মাত্রায় পৌঁছে যায়। নাহুমসের সঙ্গেই কলকাতায় প্রাচীন আমলের আরও দুটি কেকের দোকানের নাম বলতে হয়। মল্লিক কনফেকশনার্স আর ইম্পিরিয়্যাল বেকার্স অ্যান্ড কনফেকশনার্স। নাহুমের পাশাপাশি এই দুটি দোকানও পুরনো কলকাতার আমল থেকে সুনামের সঙ্গে কেকের ব্যবসা করে আসছে।
কলকাতায় কেক কীভাবে জনপ্রিয় হল সেই গল্পে নাই বা যাওয়া হল। কিন্তু এই ইতিহাসের তথ্যটাই যথেষ্ট কলকাতার বুকে কেকের প্রচলন শতাধিক বছর পূর্বেই। এখন কেকের উপর ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে উন্নত স্বাদের করার প্রচেষ্টাই চলেছে।
Discussion about this post