দেশব্যাপী লকডাউনের জেরে বন্ধ রাস্তাঘাট, দোকানপাট থেকে বিভিন্ন অফিস কাছারি। তার সঙ্গে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও। স্কুলে যাওয়া বন্ধ বলে কি শিকেয় উঠবে পড়াশোনা? উঁহু, একদমই তা নয়। বরং বাড়িতে বসেও যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া যায়। একথা মাথায় রেখেই উদ্যোগ নিয়েছেন রায়গঞ্জের থেকে কিছু দূরে অবস্থিত রাসমণি অ্যাকাডেমি স্কুলের শিক্ষিকা পাপিয়া সাহা। পেশায় তিনি একাধারে শিক্ষিকা, বাচিক শিল্পী এবং সঞ্চালিকাও। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষিকাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তিনি চালু করেছেন ‘অনলাইন ভার্চুয়াল ক্লাস’। দরকার শুধু একটি মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেট সংযোগ। ব্যাস তাহলেই কেল্লা ফতে! বাড়িতে বসেই লেখা পড়া চালিয়ে যেতে পারবে শিক্ষার্থীরা। জানতে পারবে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অজানা তথ্যও।
অনলাইন ক্লাসের মুখ্য উদ্যোক্তা পাপিয়া দেবীর কথায়, লকডাউন কালে এই মোবাইল ফোনই এখন তাঁদের হাতিয়ার। তাঁদের একমাত্র শিক্ষা সামগ্রী। শিক্ষার আদান-প্রদান চালিয়ে যেতে, তিনি এবং অন্যান্য শিক্ষিকারা মিলিত হয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ক্লাস ভিত্তিক গ্রুপ খুলেছেন। সেখানে ভিডিওর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ানো চলছে শিক্ষার্থীদের। অনলাইন ক্লাসের শেষে হোম-ওয়ার্কও দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এর ফলে মনে হতেই পারে যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হয়ত মোবাইলের ব্যবহার বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু তাদের এটাও বোঝানো হচ্ছে মোবাইল শুধু গেম খেলার জন্য নয়। পড়াশোনার কাজেও ব্যবহৃত হতে পারে। মোবাইল থেকেও তারা জ্ঞান আহরণ করতে পারে।
শিক্ষিকাদের এই প্রচেষ্টাকে সফল করতে হাতে হাত মিলিয়েছেন অভিভাবকরাও। ফলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেই প্রতিদিন নিয়ম করে চলছে ক্লাস। বাড়ছে জ্ঞানের পরিসর। অর্থাৎ গতানুগতিক গন্ডির বাইরে বেড়িয়ে গঠনমূলক কিছু করা যে অসম্ভব কিছু নয়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই উদ্যোগ। দরকার শুধু একটু ইচ্ছাশক্তি আর নতুনকে জানার আগ্রহ। পাপিয়া দেবীর এই কর্মকাণ্ড আমাদের সেই বার্তাই দিয়ে গেল।
Discussion about this post