ধরা যাক আপনি বেশ বড় একটি ফেসবুক পেজের মালিক। যার ফলোয়ার সংখ্যা বেশ চোখে পড়ার মত। হঠাৎ, আপনার কাছে নোটিফিকেশন এলো, ”আপনার পেজে ভায়োলেশন হয়েছে, আপনার অ্যাপিল করার জন্য সময় ১২ ঘণ্টা।” সময়ের মধ্যে লিঙ্কে ক্লিক না করলে আপনার পেজটি উড়ে যেতে পারে। আপনি সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেন। সঙ্গে সঙ্গে পেজের দখল চলে গেল অন্য কারো হাতে। হ্যাঁ, এভাবেই অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ইনফ্লুয়েন্সার, শিল্পের কাজে বা সাংবাদিকতার কাজে ব্যবহৃত ফেসবুক পেজগুলিকে নিশানা করছে হ্যাকাররা।
এই সাইবার প্রতারকদের পেজে ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র মত বড়, পরিচিত পেজ এবং কলকাতা পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের নামও দেখা গিয়েছিল। এভাবে পেজ শেয়ার করা হচ্ছে, যাতে পেজ এডমিনের কাছে নোটিফিকেশন যায়। সেই শেয়ার লিঙ্কের সঙ্গে যুক্ত করা ম্যালওয়্যার যুক্ত লিঙ্কে ক্লিক করলেই পেজের দখল চলে যায় অনুপ্রবেশকারীর কাছে। এরপর তথ্য হাতিয়ে নেওয়া, অশ্লীল ছবি ও ভিডিও শেয়ার সবটাই চলছে। সম্প্রতি ডেইলি নিউজ রিলও সচেতনতার দরুণ এই সাইবার আক্রমণকে প্রতিহত করতে পেরেছে।
এই সাইবার হ্যাকারদের বিভিন্ন পেজ এবং লিঙ্কের মধ্যে সম্প্রতি যে পেজটি উঠে এসেছে, সেটির নাম ’24 hours left post in appeal to remove -your – violation, See more’। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই নাম দেখে যেকোনো মানুষই কৌতূহলী হয়ে পেজ খুলে দেখবেন। পেজটি খুললেই দেখা যাবে তারা ফলো করে নির্দিষ্ট একটি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের অফিশিয়াল পেজ। কয়েক মাস আগে বিধাননগর সিটি পুলিশের ফেসবুক পেজ হ্যাক হয়েছিল। হ্যাক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পেজের প্রোফাইল পিকচারে ভারতের জাতীয় পতাকার ছবি লাগানো হয়েছিল। পেজ রিকভার হয়েছিল প্রায় তিন দিন পরে।
এই বিষয়ে ডেইলি নিউজ রিল সাইবার সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ শুভঙ্কর ভট্টাচার্যর সঙ্গে কথা বলেছিল, তিনি বলছেন, “মানুষের মনস্তত্বকে কাজে লাগিয়েও হ্যাকিং করা হয়। আবেগ ও লোভকে হাতিয়ার করে প্রতারণা হয়। লটারি বা গিফটের লোভ দেখিয়ে অ্যাপ ডাউনলোড করানো হয়, সেই অ্যাপের দিয়ে ফোনের যাবতীয় তথ্য চলে যায় হ্যাকারদের কাছে।’’ এই সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে পশ্চিমবঙ্গ তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এবং কলকাতা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে চালু হয়েছে ‘CYBUZZ’। শুভঙ্কর আরও জানিয়েছেন, “সাইবার সুরক্ষা নির্ভর করে people process and technologyর ওপর। আমরা কোন অ্যাপ ডাউনলোড করছি, কোন লিঙ্কে ক্লিক করছি, কোন অ্যাপ কোন পারমিশন চাইছে, আমাদের তথ্য কোথায়, কীভাবে যাচ্ছে; সেই বিষয়ে সচেতন থাকলেই সাইবার নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে।’’
Discussion about this post