একটার পর একটা গাছ জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে। লকলকিয়ে উঠছে আগুনের শিখা। পুড়ে মরছে জঙ্গলের জন্তু জানোয়ারেরা, কেউ কেউ বেরিয়ে চলে আসছে লোকালয়ের মধ্যে। এর মূল কারণ? তাপপ্রবাহ। এই তাপপ্রবাহ বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া বা নিদেনপক্ষে রাজস্থানের মরুভূমিও নয়। এই ঘটনা উত্তরাখন্ডের জিম করবেটের নৈনিতালের। আগুনে, ধোঁয়ায় ভরে রয়েছে নৈনিতালের আকাশ। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির সেন্টিনেল-২ কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্রায় একশো হেক্টর জমিজুড়ে দাউদাউ আগুন জ্বলার সেই ভয়াবহ দৃশ্য।
গত বছরে উত্তরাখণ্ডে প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং ধস নামার জেরে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে, ৪৫ হাজার ৬৫০টি পরিবার আক্রান্ত হয়েছে। পরিবেশের যে সাংঘাতিক পরিবর্তন খুব কম সময়ের মধ্যে ঘটে চলেছে তার নিদর্শন হিসেবে সাম্প্রতিকতম ঘটনা নৈনিতালকেই ধরা যায়। নৈনিতালের বলদিয়াখান, জোলিকোট, মঙ্গোলি, খুরপাতাল, দৈবীধুরা, ভবালী, পাইন্স, ভীমতাল এবং মুক্তেশ্বর এলাকায় দাবানলের খবর পাওয়া গিয়েছে। দাবানলের কারণে রাস্তা ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে স্থানীয়দের, যান চলাচল বিপর্যস্ত। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নৈনিতাল ও ভীমতাল লেক থেকে হেলিকপ্টারে জল এনে আগুন নেভানোর কাজ চলছে।
নৈনিতালের মত পাহাড়ি অঞ্চলে দাবানলের ঘটনা বেশ উদ্বেগজনক। এই অঞ্চলের এলাকাগুলি বিশেষত গ্রীষ্ম ও শুষ্ক মরশুমে বেশ ঝুঁকিতে থাকে। এই সময় দাবানল বন এবং বন্যজীবনের জন্য মারাত্মক হয়ে ওঠে। এছাড়া, দাবানল বায়ুর মানকেও প্রভাবিত করে যা স্থানীয় জনসাধারণের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। দাবানল প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি এবং সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। সরকারি এবং বেসরকারি উভয় সংস্থাই এই বিষয়ে কাজ করছে, তবে সাধারণ মানুষের সচেতনতা এবং অংশগ্রহণও অত্যন্ত জরুরী।
Discussion about this post