“বাবুমশাই জিন্দেগি বড়ি নেহি লাম্বি হোনি চাহিয়ে।” ‘আনন্দ’ সিনেমার সেই বিখ্যাত ডায়লগটা মনে পড়ে? বাংলায় মানে করলে যা দাঁড়ায়- বাবুমশাই জীবন লম্বা না বড়ো হওয়া উচিত! অর্ধেক মানুষের এই কথাটাই উপলব্ধি করতে অনেকটা সময় লাগে যায়। আর বাকি অর্ধেক মানুষ তা জীবনের প্রাক্কালে উপলব্ধি করতে পারলেও, যান্ত্রিক এই রোজকার মেকি জীবনে সেটি হারিয়ে যায়। তবে কিছু মানুষ থাকেন যাঁরা জীবনকে সত্যিই বড় করে দেখতে পারেন। পরিমল কাঞ্জি হলেন তাঁদেরই মধ্যে একজন।
পকেটের জোর নাই বা থাকুক মনের জোরের কাছে পকেট হার মেনে যায়। ইচ্ছে থাকলেই যে উপায় হয় তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা পরিমল কাঞ্জি বাবু। জীবনের ৫৫ বসন্ত পার করে তিনি সাইকেল নিয়ে ছুটেছেন গোটা দেশ ঘুরতে। জীর্ণ শরীরে খুঁজে চলেছেন বাঁচার মানে। বেরিয়ে পড়েছেন জীবনকে কাছ থেকে দেখতে তাকে উদযাপন করতে! কলকাতার বড়োবাজার অঞ্চল থেকে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি তিনি যাত্রা শুরু করেন কার্গিলের উদেশ্যে। জীবনের এতোগুলো বছরে দেখেছেন কত ভালো-খারাপ সময়। এবার দেখা বাকি অচেনাকে, অজানাকে! বিগত ৬ মাস ধরে অতিক্রম করে চলেছেন কত দুর্গম রাস্তা। বললেন এই এডভেঞ্চারের শেষ কিন্তু এখানেই নয়। এরপরে নেপাল, সিক্কিম এবং নর্থ ইস্ট ভারতের প্রদেশে গুলি ঘুরে তবেই বাড়ি ফেরার প্ল্যান।
ঝুলি ভর্তি সান্তাক্লজের মতোই এক মস্ত বড়ো ব্যাগ ভর্তি করে চললেন আমাদের কাঞ্জিবাবু জীবন জয়ের উদেশ্যে। শুধু তফাত হলো সান্তার মতো স্লেজ নেই। এই কাঞ্জিবাবুর বরং রয়েছে একটি সাইকেল। আর ঝুলির মধ্যে খেলনা, উপহারের বদলে রয়েছে এক ব্যাগ স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্খা। সহজ নয় এই পথ তবু তাঁর মুখ ভর্তি হাসি। সত্যি পরিমল কাঞ্জির মতোই মানুষেরা পারেন জীবনকে বড় করে দেখতে। শিখিয়ে দিয়ে যান আমাদের জীবনের মানে। পকেটের কাছে জিতে যায় মনের জোর। আর যান্ত্রিকতার ভিড়ে জীবনযুদ্ধে জিতে যায় পরিমল কাঞ্জিদের মতো মানুষেরা।
Discussion about this post