বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিলো পৃথিবীর বুকে কালজয়ী এক দৃষ্টান্ত। শুধু মুক্তিসেনা আর ভারতীয় মিত্রসেনাই নয়, সাধারণ মানুষের অবদানও ছিলো অপরিসীম। দেশকে মুক্ত করতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন সমস্ত শ্রেণীর মানুষ। সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে সেই সময়ে সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছিলো। সাধারণ মানুষ হাতে বন্দুক তুলতে না পারলেও দায়িত্ব তুলে নেয় প্রচুর। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ভাষণ আর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে তার স্বাধীনতার ডাক সবাইকে শক্তি আর প্রেরণা জাগায়।
রাজাকার গোষ্ঠী যেমন বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, তেমনি তাদেরকে ঠকিয়েও দেশের কাজে সাহায্য করেন বন্দুকহীন মুক্তিযোদ্ধারা। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে বন্ধুত্ব করে তাদের বিশ্বাস অর্জন করেন এবং পরে গোপনে তাদের সমস্ত পরিকল্পনা জানিয়ে দেন মুক্তিসেনাদের। এছাড়াও পাকবাহিনীর বন্ধু বলে মুক্তিসেনাদের গা ঢাকা দেওয়াটাও অনেকটা সহজ করে দিতেন তারা। মুক্তিবাহিনীকে নিজেদের বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া থেকে শুরু করে তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া, চিকিৎসায় সাহায্য করা এসবই মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখেছিল।
দেশের মহিলারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিসেনাদের খাবারের জোগান দেন। বাড়ির ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা রুটি পানীয় পৌঁছে দিয়ে আসে মুক্তিসেনাদের কাছে। সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ছিলো মারাত্নক ঝুঁকি। বাড়ি থেকে কাজের জন্য বেরোলেও হানাদার বাহিনী ধরে ফেলতো। তারপর বধ্যভূমিতে নিয়ে গিয়ে গণহত্যা। এভাবেই স্বাধীনতার নয়মাস ভাগ্যের ওপরে ভরসা রেখে মুক্ত দেশের মুক্ত জীবনের আশায় কেটেছে সাধারণ মানুষের দিন।
চিত্র ঋণ – historica.fandom.com
Discussion about this post