বাংলায় তো বটেই, সারা পৃথিবীতে চলছে ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি। আজ ১০ ফেব্রুয়ারি দিনটি পরিচিত ‘টেডি ডে’ হিসেবে। টেডিটা কী? ভালুকছানার নাম টেডি। প্রিয়জনের মন ভোলাতে টেডি বিয়ারের জুড়ি মেলা ভার। তাই টেডি বিয়ারের খেলনা দিয়েই ভালোবাসার মানুষের মন জয় করতে হয়। তবে উপহার হিসেবে শিশুদেরও দারুণ পছন্দ টেডি বিয়ার। এই সফটটয় জন্মের পিছনে রয়েছে এক দারুণ গল্প। সেই গল্প, যে ঘটনার মাধ্যমে ভালুকছানার নাম দেওয়া হয়েছিল টেডি।
গল্প শুরু হয় আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট থিওডর রুজভেল্টকে নিয়ে। নিশ্চয়ই আকাশ থেকে পড়লেন! কোথায় মিষ্টি ভালুকছানা, কোথায় ভ্যালেন্টাইন্স ডে, আর কোথায় বিশ শতকের প্রথম দশকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট! হ্যাঁ, সেদিন শিকারে বেরিয়ে রুজভেল্ট পছন্দমত একটাও শিকার পাননি। তাঁর মন রাখতে ধরে আনা হল একটা ছোট্ট কালো ভালুকছানা। তাকে বেঁধে রেখে প্রেসিডেন্টকে বলা হল রাইফেল চালাতে। কিন্তু প্রেসিডেন্টের দয়ার শরীর, কিছুতেই রাইফেল চলল না। ছেড়ে দেওয়া হল ছানাটিকে।
‘ড্রইং দ্য লাইন ইন মিসিসিপি’ নামের কার্টুনে এই গোটা গল্পকে তুলে ধরেছিলেন ওয়াশিংটনের বিখ্যাত কার্টুনিস্ট ক্লিফর্ড বেরিম্যান। তাঁর ছবিতে দেখা গেল রুজভেল্ট রাইফেল হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁর পিছনে পুঁচকে এক ভালুকছানা। সাধারণ মানুষের তাই দেখে গেল মন গলে। প্রেসিডেন্টের দয়ার শরীর নিয়ে শুরু হল চর্চা। শুরু হল প্রশংসা। সেই সময় সাধারণের কাছে রুজভেল্ট পরিচিত ছিলেন ‘টেডি’ নামে। ফলে কালো ভালুকছানাটির নাম দেওয়া হল টেডি।
ওদিকে কার্টুন দেখে অনুপ্রাণিত হলেন ব্রুকলিনের খেলনার দোকানের মালিক মরিস মিচম। তিনি বানিয়ে ফেললেন টেডি বিয়ার। তবে সেটা বিক্রি করার বদলে দোকানে সাজিয়ে রাখেন তিনি। পাশে রেখেছিলেন বেরিম্যানের আঁকা কার্টুনের কপি। কিন্তু খদ্দেররা দোকানে ঢুকেই কিনতে চান টেডি। মিচম রুজভেল্টের কাছে তাঁর বানানো টেডি বিক্রির অনুমতি চান। বলা বাহুল্য রুজভেল্ট অনুমতি দিয়েছিলেন। ১৯০৩ সালে তৈরি হল আইডিয়াল টয় কোম্পানি। তারপর তৈরি হল টেডি বিয়ার। সেই টেডির রমরমা চলছে আজও।
Discussion about this post