জীবনের ধারণা মানেই টিকে থাকা, আর তার জন্য চালিয়ে যাওয়া অবিরাম সংগ্রাম। আর এমন এক জীবন্ত সংগ্রামীর নাম সুনীতা কৃষ্ণন। ছোটো থেকেই যার মন কাঁদতো অন্যের জন্য। মাত্র আট বছর বয়স থেকেই তার এই পরিনত মনোভাব। নাচ শিখতে শিখতে মাত্র ১২ বছর বয়সেই খুলে ফেলেন একটি নাচের স্কুল। পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ছোট্ট মেয়ের মাথা তুলে বেঁচে থাকা মানতে পারেনি হয়তো! একসাথে ৮ জন পুরুষ মিলে ধর্ষণ করে তাকে।
তবে এ মেয়ে দমে যাবার নয়। সেই থেকে লড়াই আরও দৃঢ় হয়ে ওঠে তার। সুনীতার জীবনের মোড় ঘুরে যায় এই ঘটনা থেকেই। বেঙ্গালুরু সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে পরিবেশ বিদ্যায় স্নাতক এবং ম্যাঙ্গালোর থেকে এম এস ডব্লিউ ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। এরপর ঝাঁপিয়ে পড়েন নারী পাচার এবং যৌন শোষণ রুখতে। ১৯৯৬ সালে ব্যাঙ্গালোরের মিস ওয়ার্ল্ড কম্পিটিশন হতে বাঁধা দিয়েছিলেন তিনি। তার বক্তব্য ছিল নারীকে পণ্য হতে দেওয়া যাবে না। এই প্রতিবাদের তার জন্য ঠাঁই মিলেছিল জেলে।
এই প্রতিবাদী ব্যক্তিত্বের জন্য তাকে ছাড়তে হয় নিজের বাড়ি পর্যন্ত। বাড়ি ছেড়ে সেসময়ে একাই তিনি হায়দ্রাবাদ চলে আসেন। ‘মেহেবুব কি মেহেন্দি’ নামক এক নিষিদ্ধ পল্লীর কর্মীদের জন্য কাজ করেন তিনি। শুরু করেন নিজের ব্লগ – ‘সুনীতা কৃষ্ণন, দ্যা অ্যান্টি ট্রাফিকিং ক্রুসেডর’। তার কলমে উঠে এসেছে বহু নারীর যন্ত্রণার কথা। এই ব্লগে পাওয়া যায় এক ৪ বছরের মেয়ের কথা। যাকে ধর্ষণ করেছে তারই বাবা, কাকা, দাদারা। আবার পাওয়া যায় কোনো যৌনকর্মীদের এইডস আক্রান্ত হয়ে অত্যাচারিত হবার কথা। সমস্ত অত্যাচার এত কাছ থেকে দেখার পর তিনি নিয়ে ফেলেন আরও এক সিদ্ধান্ত।
Discussion about this post