এ যুগে যুদ্ধের ঘোষণা দামামা বাজিয়ে হয় না ঠিকই। তবে ‘যুদ্ধ’ শব্দটি শুনলেই বুকের মাঝে বেজে ওঠে দামামা। ভয় এসে ভর করে মনে। রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধও তেমন সাড়া ফেলেছিল গোটা বিশ্বে। গোটা বিশ্ব যে যুদ্ধের আভাস পেয়েছে তার ভেতরে চলেছে আরও নানান যুদ্ধ। মানুষের অন্যরকম সংগ্রাম। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের মাটিতে সেই যুদ্ধ রুখতে দাঁত কামড়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন পৃথ্বীরাজ ঘোষ। তিনি একজন আদ্যপান্ত ভারতীয় মানুষ।
তবে পৃথ্বীরাজ তার পেশার খাতিরে কিয়েভের বাসিন্দা। তিনি একজন চিকিৎসক। বেশ কিছু বছর কিয়েভে বাস করার কারণে তিনি পালন করেন তার দায়িত্ব। ছেলের কাজের জন্য অত্যন্ত খুশি এবং গর্বিত তার বাবা মা। তবে কী এমন করলেন পৃথ্বীরাজ যার জন্য গোটা দেশে তার মাথা উঁচু হলো? সময়টা যুদ্ধের। চারিদিকে গুলি, বারুদের গন্ধ। জীবন বাঁচাতে শিক্ষার্থীরা আশ্রয় নিয়েছে বাঙ্কারে। জল নেই খাবার নেই। বাঙ্কারে অক্সিজেনও কমে আসছে ধীরে ধীরে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে লড়ে গেছেন পৃথ্বীরাজ। ইউক্রেনের রাজধানীতে প্রায় বছর ১৫ এর বাসিন্দা তিনি। এই অবস্থায় তিনি ভারত সহ প্রায় ৩০০টি দেশের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পেরেছিলেন।
পৃথ্বীরাজ বাবুর বাবা প্রদীপ ঘোষ আর মা ব্রততী ঘোষ। বর্তমানে ওনারা কলকাতার হিন্দুস্তান পার্কের বাসিন্দা। ছেলের এই সাহস দেখে তারা এক কথায় মুগ্ধ। যদিও তাদের চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট ছিল। আর এটা একেবারেই স্বাভাবিক, ভয়ানক ওই পরিস্থিতিতে ছেলে সুদূর বিদেশে বলে কথা! কিন্তু ছেলের কীর্তি সম্পর্কে মা বলেন, আমাদের ছেলে খুব ভালো কাজ করেছে। ছেলে খালি সুস্থভাবে আমাদের কাছে ফিরে আসুক।
অন্যদিকে, ছেলেও সমানে সাহস দিয়ে গেছে মা বাবাকে। রাত দিন খাওয়া দাওয়া ভুলে তিনি যুদ্ধে জখম মানুষদের চিকিৎসা করে গেছেন। অক্লান্ত পরিশ্রমকে অতিক্রম করেই দেশে ফেরার পরিকল্পনা তার। পরোক্ষভাবে হলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ এক ভারতীয়র লড়াই। পৃথ্বীরাজের কথায়, বাকি শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে না পাঠানো অবধি তার কাজ শেষ হয়নি।
তথ্য ও চিত্র ঋণ – Literacy Paradise
Discussion about this post