কথায় আছে, ‘ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা’। স্বপ্ন আসলে বড়ই দেখা উচিৎ। যেমন দেখেছে মেহেদী। ঠাকুরগাঁও সদরের রুহিয়া ইউনিয়নের ঘুরনগাছ গ্রামে তার বাড়ি। বাবা আবুল হোসেন। মা নাসিমা বেগম। অত্যন্ত গরিব পরিবারের ছেলে মেহেদী চান্স পেয়েছে বুয়েটে। পূরণ করতে চলেছে তার স্বপ্ন। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াকালীন পাশাপাশি করতে হত কাজ। নইলে মনের খিদে মেটার কথা অনেক দূর! আগে মেটাতে হত পেটের খিদে। তবে অভাব কখনো স্বপ্ন দেখা বন্ধ করতে পারেনি মেহেদীর। এস এস সি পরীক্ষায় তার নম্বর হয় ৫ জি পি এ। এই ফলাফলের পর আত্মবিশ্বাস দৃঢ় হয় তার। ঘুড্ডি ফাউন্ডেশন থেকে বিনা মূল্যে খাবার পেতে শুরু করে মেহেদী। তাই সেখানেই কোচিংও শুরু হয় তার। টার্গেট ছিল এইচ এস সি। আর সেই টার্গেট বর্তমানে পূরণ হয়েছে। এইচ এস সি তেও তার স্কোর ৫ জি পি এ।
মেহেদী বলে মা বাবা কোনোদিন তাকে কোনো কিছুতে বাধা দেয়নি। ছেলেকে ঠিক মত খরচ দিতে পারেননি ঠিকই তবে মনোবল দিয়ে গেছেন অবিরাম। তার বাবা মা কাজ ফেলে কোনোদিন বসে থাকতেন না। বাবা চাতালে কাজ করেন। মা যান দিনমজুরিতে। এমনও সময় গেছে তিন বেলা খেতে পেতো না তারা। কিন্তু হাল ছেড়ে দিতে নেই। তাহলে আগেই হেরে যেতে হয়।
পড়াশোনা কষ্ট সাধ্য ছিল, কিন্তু অসম্ভব নয়। মেহেদীর জীবন আবারও আমাদের বুঝিয়ে দেয় পরিশ্রমই সাফল্যের একমাত্র চাবিকাঠি। যাত্রা সহজ থাকে না। তবে রাস্তা খুঁজে নিতে হয়। মেহেদী জানান, এই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তাতে সে বেজায় খুশি। কিন্তু এখনও অনেকটা দূর যাওয়া বাকি তার। স্থানীয় ইউপি সদস্য সারোয়ার হোসেন জানিয়েছেন তিনি মেহেদীর পাশে থাকবেন। সার্বিক সেবায় নিয়োজিত থাকবে উপজেলা প্রশাসনও।
চিত্র ঋণ – বেকার জীবন
Discussion about this post