একটু ভেবে বলুন তো এক টাকায় এখন কী পাওয়া যায়? বেশি হলে একটা লজেন্স মাত্র, তাই তো! তবে যদি বলি একটাকার সিঙারা, নিমকির কথা। বিশ্বাস করা মুশকিল, তবে এই সময়ে যেখানে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম উর্ধমুখী, সেখানে দিনাজপুরের শচীন ঘোষের এক টাকার সিঙারার কদর লোকমুখে প্রচারিত। ছেলে বুড়ো সবার কাছেই প্রিয় শচীন বাবু, গত ৫ এপ্রিল ২০২২ পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে।
শচীন বাবুর এই ব্যবসার শুরুটা ১৯৯৫ সাল থেকে। বাড়ি লাগোয়া ছোট দোকানঘর, আর সেখানেই সকাল এগারোটা থেকে দুপুর দেড়টা অবধি ক্রেতারা ভিড় জমাতেন। সময় বদলেছে, একটাকার নোটের বদলে আসে একটাকার কয়েন, তবু ২৬ বছরে কখনো দাম বাড়াননি শচীনবাবু। শচীনবাবু বলতেন সিঙারার দাম কম হলেও বিশেষত্ব রয়েছে, এই সিঙারা দু-তিন দিন রেখে দিলেও নষ্ট হবে না, সম্ভাবনা নেই পেটের সমস্যারও। প্রতিদিন তেল পরিবর্তন করে ভাজতেন এই সিঙারা। দৈনিক মোটামুটি ১০,০০০ সিঙারা আর নিমকি প্রস্তুত করতেন। সিঙারার পুর বানাতে ব্যবহার করতেন আলু, ক্যাপসিকাম বিভিন্ন ধরনের মশলা।
শুধু দিনাজপুর নয় শচীন ঘোষের সিঙারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গাতেও পরিচিত। গত ২৬ বছরে নিত্যদিন জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও শচীনবাবু চেয়েছিলেন আমৃত্যু যেন তার সিঙারার দাম একই থাকে। তার মুখরোচক সিঙারার ভাগ পেতে ক্রেতাদের ভিড় নিত্যদিন চোখে পড়ার মতো। শচীনবাবু আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও তার এক টাকার সিঙারার কদর থাকবে লোকমুখে।
তথ্য এবং চিত্র ঋণ – মহম্মদ সাইফুল ইসলাম
Discussion about this post