পিপুল্যানের নাম শুনেছেন? শোনেননি? তাহলে তো বলতে হয়, অনেক কিছুই হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। কোনো সমস্যা নেই! এইবার জেনে নিয়ে পরের বার না হয় ঘুরে আসবেন। হাওড়া জেলার নিশ্চয়ই নাম শুনেছেন? সেই হাওড়ার এক বিখ্যাত জনপদ হলো পিপুল্যান। পিপুল্যান বিখ্যাত তার বিশাল লোক উৎসব শিবগাজনের জন্যই। শিবগাজন কিন্তু এই চৈত্র মাসেই হয়ে থাকে। বিশাল তার আয়োজন, বিচিত্র তার সম্ভার! সামনে না দেখলে বিশ্বাসই করতে পারবেন না! আসুন একে একে জেনে নিই এই উৎসবের বিশেষ দিকগুলো।
গাজন উৎসবে ঘট স্থাপন করা হয়। দুটি গাজন এবং গণেশ, দুর্গা – মোট তিনটি ঘট স্থাপন করা হয়ে থাকে। এরপর দুজন সন্ন্যাসী তাদের নিজের গোত্র ছেড়ে শিব গোত্র গ্রহণ করেন আর তারপরেই শুরু হয় আসল উৎসব। প্রথমে হয় ঘটের পূজো। তারপর হয় শোলমাছ বলি। সারাদিন মন্দিরে পুজো হয়ে থাকে। রাতের বেলা ঘটে এক বিশেষ অনুষ্ঠান। এক ব্রাহ্মণের বাড়িতে শিবঠাকুরের আইবুড়ো ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। প্রথম দিন থেকে শুরু করে শেষ দিন পর্যন্ত শিবঠাকুরকে ভীষণ যত্ন করে পুজো করা হয়। তাঁকে ভীষণ সুন্দর করে ভক্তি ভরে ভোগ খাওয়ানো হয়।
এবার আসি এই গাজনের ভোগ কী কী দিয়ে তৈরি হয় সেই বিষয়ে! আগে মাটির হাঁড়িতে ভোগ রান্না হতো। এখন যুগ বদলেছে। আর বদলেছে মাটির হাঁড়িও। এখন ভোগ রান্না হয় পিতলের হাঁড়িতে আর তলায় থাকে তালপাতার জ্বাল দিয়ে তৈরি মাটির উনুনে। মূলতঃ ভোগের উপাদানে থাকে আতপ চাল, আলু, রাঙা আলু, নোটে শাক, উচ্ছে, মুগ ডাল, চিনি, কাঁচা আমের গুড় ইত্যাদি। তবে প্রতিদিনের ভক্ত সমাগমের উপর আতপ চালের পরিমাণ নির্ভর করে। এই ভোগ রান্না করেন ব্রাহ্মণরা আর কলাপাতায় এই ভোগ নিবেদন করা হয়ে থাকে।
এতো কিছু শুনে নিশ্চয়ই যেতে ইচ্ছে করছে? সেটাও বলে দিচ্ছি – প্রথমে তো হাওড়ায় যেতে হবে। তারপ্র সেখান দিয়ে ধরতে হবে বাগনান যাওয়ার ট্রেন। ট্রেন থেকে নেমে আপনি পাবেন দেওড়া যাওয়ার বাস বা অটো। ব্যাস, গন্তব্যের খুব কাছে চলে যেতে পারবেন। দেওড়া থেকে আপনি পেয়ে যাবেন পিপুল্যান যাওয়ার অটো বা টোটো! কষ্ট একটু হবে বটে। তবে কষ্ট করলে তবেই তো কেষ্ট মিলবে! কী বলেন!
তথ্য এবং চিত্র ঋণ – কৌলাল
Discussion about this post