করোনা আতঙ্কে চলছে দ্বিতীয় দফার লকডাউন। ইতিমধ্যেই হুগলি জেলাকে ‘রেড জোন’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। বেড়েছে নিষেধাজ্ঞার তালিকাও। তবু এর মধ্যেও থেমে থাকেনি মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসার প্রয়াস। শ্রীরামপুরের ‘মানুষের সাথে, মানুষের পাশে’ নামক একটি দল নিরন্তর সেই চেষ্টাই করে চলেছে। কোনও এনজিও কিংবা রাজনৈতিক দলের শাখা-প্রশাখা নয়। স্রেফ কিছু বন্ধুরাই একজোট হয়ে বিপদে পড়া স্থানীয় মানুষদের পাশে এখন এসে দাঁড়ালেন।
লকডাউনের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ শ্রীরামপুরের জুটমিল। ফলে কাজ হারিয়েছেন বহু জুটমিল শ্রমিক। রোজগার বন্ধ, তাই একমুঠো ভাত জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। তাদের মুখেই এবার খাবার তুলে দিল ‘মানুষের সাথে, মানুষের পাশে’। মূলতঃ দু’দফায় এগিয়ে আসে তাঁদের সাহায্যের হাত। প্রথমে বেশ কিছুদিন রান্না করা খাবার তুলে দেওয়া হচ্ছিল অভুক্ত মানুষগুলির হাতে। গত ৮-২৪শে এপ্রিল হোম ডেলিভারির মাধ্যমে শ্রীরামপুরের ক্ষেত্র মোহন শা মেলাবাড়ি এলাকায় প্রায় চারশোর ওপর মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয় সেই রান্না করা খাবার। এছাড়া চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, সোয়াবিন, বিস্কুট, সাবান সহ বেশ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়ার উদ্যোগও নেন তাঁরা। শ্রীরামপুরেরই জুটমিল সংলগ্ন লাইনে কাজহীন শ্রমিক পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় সেগুলি।
স্বেচ্ছাসেবী এই দলটির তাদের পাশে পেয়েছেন বহু মানুষকেই। হোম ডেলিভারি ও অন্যান্য নানা সাহায্যে তাঁরা পাশে পেয়েছেন কাকলী দেবীকে। ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে জোগাড় করা হয়েছিল চাঁদা। দুঃস্থদের সাহায্যের জন্য এখনও পর্যন্ত ৪৮ হাজারের ওপর খরচ হয়েছে। দলটির অন্যতম সদস্য শিবাশিস, অণির্বান, সৌম্যশিষ, সায়ন্তন, সুলেমান, অর্ক, অনিন্দ্য ও পঙ্কজ প্রমুখদের চেষ্টায় এখন দু-মুঠো ভাতের আশা দেখছেন বহু অভুক্ত মানুষ। আগামী দিনেও বিপদে মানুষের পাশে থাকবেন, এই আশ্বাসও দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের এই প্রচেষ্টা সত্যিই কুর্ণিশযোগ্য!
Discussion about this post