বিগত কয়েকদিনে বেশ কয়েকবার জঙ্গি হানা হয়েছে ফ্রান্সে। রক্তপিপাসু ধর্মান্ধদের দৌরাত্ম্যে হতবাক গোটা বিশ্ব। ইসলামী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয় মুসলিম বিশ্বে রোষের মুখেও পড়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এই পরিস্থিতিতে জঙ্গি হামলার নিন্দায় সরব হয়ে ফ্রান্সের পাশে দাঁড়ালো সৌদি আরব। উল্লেখ্য, এই প্রথম কোনও মুসলিম দেশ ফ্রান্সে হওয়া সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিবাদে সরব হয়েছে। এর আগে তুরস্ক, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মহাথির মহম্মদও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সমালোচনায় সরব হয়েছেন। মহাথির মহম্মদের বক্তব্য ছিল, লক্ষ লক্ষ ফরাসি মানুষকে হত্যার অধিকার রয়েছে মুসলিমদের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর প্যারিসের একটি স্কুলের ক্লাসরুমে বাক স্বাধীনতার বিষয়ে পড়ানোর সময়ে ‘শার্লে এবদো’ পত্রিকায় প্রকাশিত হজরত মহম্মদের কিছু ব্যঙ্গচিত্র দেখিয়েছিলেন এক শিক্ষক। আর তার জেরেই রাস্তায় প্রকাশ্যে তাঁর মাথা কেটে নেয় এক চেচেন জঙ্গি। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ‘ইসলামিক মৌলবাদের স্বরূপ’ বলে তোপ দেগেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এছাড়াও ফরাসী প্রেসিডেন্ট ওই শিক্ষককে ‘নায়ক’ বলে মন্তব্য করেন। এরপর থেকেই ফরাসী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ‘মুসলিম ভীতি’ জাগিয়ে তোলার অভিযোগ এনে তুমুল হইচই শুরু করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগান। সুযোগ বুঝে আসরে নেমে পড়ে মুসলিম দেশগুলিও।
এরপর ২৯ অক্টোবর ফ্রান্সের নিস শহরে ঐতিহাসিক নোতরদাম গির্জার ভিতর এক মহিলার গলা কেটে খুন করা হয়। হামলাকারীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন আরও ২ জন। আহতও হন বেশ কয়েকজন। এই অবস্থায় ফ্রান্সের পাশে দাঁড়ায় ভারত। তবে প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে ফ্রান্স পাশে পেল সৌদি আরবকে। সরকার নিয়ন্ত্রিত সৌদি প্রেস এজেন্সিতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সৌদি বিদেশমন্ত্রকের সাফ বক্তব্য, “আমরা যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদী হামলার বিরুদ্ধে। যে কাজে হিংসা ও বিদ্বেষ ছড়ায় তেমন কাজ থেকে দূরে থাকা অত্যন্ত জরুরি।” এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্টও সাফ বার্তা দিয়েছেন, কোনওভাবেই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মাথা নত করবে না দেশ।
Discussion about this post